আড়াইহাজার বিএনপির ঐক্য, জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী সুমন!

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা বিএনপির হাল ধরছেন সদ্য প্রয়াত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ এম বদরুজ্জামান খান খসরুর ছেলে, সাবেক যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন। একই সাথে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে নিজে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তাকে চাইছে তৃনমুলের নেতৃবৃন্দ।

সরজমিনে আড়াইহাজার ঘুরে জানা গেছে, আড়াইহাজার বিএনপিতে এতোদিন কোন্দল থাকলেও বদরুজ্জামান খসরুর মৃত্যুর পর এক অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীরা পূর্বের সব বিবেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে খসরুর ছেলেকে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। খসরুর ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান অঙ্গুর নিজেও চাইছেন বিএনপিতে আর কোন বিবেদ না থাকুক।

সম্প্রতি থানা বিএনপির এক বৈঠকে কাউন্সিলররা থানা বিএনপির দায়িত্বভার তুলে দেন তাঁর ছেলের হাতে। চাচাও চাইছেন ভাতীজা নেতৃত্বে আসুক।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সারাদেশের নির্বাচনী এলাকাগুলোয় ভোটের মাঠে উত্তেজনা ততই বাড়ছে। এর ব্যতিক্রম নয় নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন।

বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা শুরু করেছেন আগাম জনসংযোগ। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে বিএনপির নেতারা। জনসংযোগের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলছে তৎপরতা। উপজেলার গ্রামেগঞ্জে বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। আড়াইহাজার আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু। তার পাশাপাশি তৎপর সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন। এরই মধ্যে তিনি কেন্দ্রে লবিং শুরু করেছেন। এ ছাড়া তৃণমূলে তৎপরতা চলছে মনোনয়ন প্রত্যাশী যুবলীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল পারভেজ।

আড়াইহাজারে দলীয় অবস্থান এবং সমর্থকদের দিক দিয়ে বিএনপি অনেক শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। সদ্য প্রয়াত বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও থানা বিএনপির সভাপতি বদরুজ্জামান খান খসরুই আড়াইহাজার বিএনপির কান্ডারি ছিলেন বলে জানান দলীয় নেতাকর্মীরা।

তারা জানান, ১৯৯১ সালে খসরু উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে আপন ছোট ভাইকে বিএনপির মনোনয়ন এনে দেন। এর আগে তিনি নির্বচনী মাঠে ছিলেন না। এই সুবাধে আতাউর রহমান আঙ্গুর ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সংস্কারবাদী হওয়ায় দল তাকে মনোনয়ন দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণে বদরুজ্জামান খান খসরু নিজেই হাল ধরেন এলাকার। প্রার্থী হন বিএনপির। কিন্তু আঙ্গুরের বিরোধীতায় ৮৭ হাজার ভোট পেয়েও আসনটি হাতছাড়া হন বিএনপির এই প্রার্থী। গত ১১ জুলাই বদরুজ্জামান খসরুর অকাল মৃত্যুতে অভিভাবক হারান বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে এক মাসের মাথায় বিএনপির খসরু গ্রুপ ও আঙ্গুরের গ্রুপের নেতাকর্মীরা এক সাথে হয়ে ঘোষণা দেন এখানে আর বিবেদ থাকবে না। সেই ক্ষেত্রে নেতা হিসেবে খসরুর ছেলে মাহমুদুর রহমান সুমনকে বেছে নেন তারা।

আড়াইহাজারে রাজনৈতিক মামলার কারণে বিএনপির অনেকেই দলীয় রাজনীতির বাইরে রয়েছেন। কেউ কেউ নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাত করে চলছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে।