খুলনার আদালতে ধর্ষণ মামলার জট, নতুন আইনে দ্রুত নিষ্পত্তির আশা

বিচার কাযক্রমে দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে খুলনার তিনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৬১৯টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এমনকি ১০ বছর আগের ধর্ষণ মামলায় বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি আজও।গেল বছরে ট্রাইব্যুনালে আসা ৮০টি মামলার বিচারকার্য এখনো শুরুই হয়নি। তিনটি ট্রাইব্যুনালে প্রতিদিন গড়ে ৫০টি করে মামলার ধার্য দিন পড়ছে। এদিকে, নতুন আইন অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. মহিদুজ্জামান গত ১২ জুলাই বদলি হয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বে রয়েছেন অপর একজন বিচারক। জামিন শুনানি ও আপোষযোগ্য মামলা ছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রম নেই। এ ট্রাইব্যুনালে ১২১টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। করোনা পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানতে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী ডাকা হচ্ছে না।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ৩১০টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। প্রতি মাসেই নতুন নতুন মামলা আসছে। এখানেও চার্জশিট আসতে বিলম্বিত হচ্ছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ১৫৯টি ধর্ষণ মামলা বিচারাধীন। তার মধ্যে নয়টি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ। সবচেয়ে আলোচিত মামলা দৌলতপুরে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মোছা. হালিমাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা। এ হত্যাকাণ্ড ঘটে ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর। মামলাটিতে ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ট্রাইব্যুনালে ২০১৯ সালের জুন থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৩টি নতুন মামলা এসেছে। এসব মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি এখনো।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি অলোকা নন্দা দাশ জানান, সাক্ষী আসছে না। তাছাড়া করোনাকালীন সময়ে অনেক মামলা পেন্ডিং হয়ে আছে। ফলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না।

ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি জেসমিন পারভীন জলি জানান, গত বছরের জুন থেকে এ পর্যন্ত আসা মামলার বিচার কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। এ ট্রাইব্যুনালে ২০১১ সালের মামলাও বিচারাধীন। তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিট দিতে বিলম্ব করছেন। সাক্ষী না আসায় সবচেয়ে আলোচিত দৌলতপুরের শিশু হালিমা ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলার বিচার কার্য শেষ হচ্ছে না।

ট্রাইব্যুনাল-৩ এর পিপি মো. ফরিদ আহমেদ জানান, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নগরীর বাস্তুহারা কলোনীর আফসানা মীম নামের কিশোরীকে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুর দণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এটাই এ টাইব্যুনালের শেষ রায়। নতুন আইন অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ হলে সুফল পাওয়া যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।