খুলনায় চতুর্থ দিনের মতো ধর্মঘটে বাস মালিক-শ্রমিকরা

নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে খুলনায় চতুর্থ দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছে বাস মালিক ও শ্রমিকরা। এতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলার কোনো দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। এছাড়া অভ্যন্তরীণ বেশিরভাগ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা।

৯ দফা দাবিতে বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ওই দিন রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠকে দাবি মানার আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে তারা।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান মিঠু বলেন, খুলনায় এখনো বাস চলাচল শুরু হয়নি। বুধবার রাতে মালিক ও শ্রমিক নেতারা ঢাকায় গেছেন। মন্ত্রণালয়ে ট্রাক মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে সভা হয়েছে। বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাস চলাচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম বেবী বলেন, বাস শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি, ট্রাক শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাই সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিক ও চালকরা।

তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার ঢাকায় শ্রমিক ফেডারেশনের বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকেই মূলত পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত হবে।

১ নভেম্বর থেকে নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ১৭ দিন প্রচারণার পর সোমবার থেকে আইনটি প্রয়োগ করে পরিবহন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিআরটিএ)। নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে সোমবার থেকে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন মালিক ও শ্রমিকেরা। তারা জানান, নতুন সড়ক আইনে বাস ও চালকের কাগজ হালনাগাদ থাকতে হবে। কিন্তু বেশিরভাগ বাস ও চালকের তা নেই। এ কারণে মালিক ও চালকরা ভয়ে বাস চালাচ্ছেন না।

আন্দোলনরত বাস চালকরা বলছেন, নতুন আইনে দুর্ঘটনার জন্য চালকদের দায় নিতে হচ্ছে। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। এ আইন মেনে নেয়া যায় না। যার প্রতিবাদে চালকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।

এদিকে টানা ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাস না চলায় যাত্রীরা বিকল্প পরিবহনে বেশি ভাড়া দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করছেন।

অন্যদিকে, খুলনা থেকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় রেল স্টেশনে যাত্রীদের তীব্র চাপ বেড়েছে। অনেক যাত্রী টিকিট না পেয়েও জোর করে ট্রেনে উঠছেন। অনেকে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন।

আজকের বাজার/এমএইচ