ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আবাসন ব্যবসা

নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন,এমপিঃ রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) রাজধানী ঢাকাকে সুপরিকল্পিত নগরায়ণে রূপান্তরের পাশাপাশি নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা আবাসন সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রিহ্যাব সদস্যদের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য হলো ঝুঁকিমুক্ত, পরিবেশবান্ধব পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে সরকারের উন্নয়ন-সহযোগী হিসেবে কাজ করে চলেছে রিহ্যাব-সদস্যরা।

শহরমুখী মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রয়োজন মেটাতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে কাজ করে যাচ্ছে রিহ্যাবের ১,০৪২টি সদস্য-ডেভেলপার-প্রতিষ্ঠান। তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে পরিকল্পিত নগর নির্মাণে সচেষ্ট রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য সুপরিকল্পিত আবাসন নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলাই বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সে চিন্তা মাথায় রেখে সরকার ও রিহ্যাব সদস্যদের নানামুখী কার্যক্রমে স্বল্প ও মধ্যবিত্তসহ সকলের জন্য একটি স্বপ্নীল আবাসনের স্বপ্ন পূরণে আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ী।

রিহ্যাবের বিপুল কার্যক্রমে গত কয়েক দশক সহজে আবাসনের মালিকানা সৃষ্টিতে মানুষের আত্মনির্ভরতা সৃষ্টি করেছে। এছাড়া সরকারের রাজস্ব আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন কররে আসছে। রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ ২৬৯ প্রকার লিংকেজ শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে রিহ্যাব। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আবাসন খাতের অবদান প্রায় ১৫ শতাংশ। এদেশে আবাসন শিল্প শুধু আবাসনই সরবরাহ করছে না, একই সাথে প্রায় ৩৫ লক্ষ শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল দুই কোটি মানুষের অন্নের যোগান দিচ্ছে। আবাসন খাত নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে। রিহ্যাব সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণেই আজ শহরগুলোতে স্কাই লাইনের পরিবর্তন হয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের আলাপ আলোচনা চলছে। কয়েকটি ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে হাউজিং লোন দিলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে হাউজিং লোনের কোনো ঘোষণা আসেনি। আমরা আশা করি সরকার এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিবে। নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত নাগরিকদের আবাসনের স্বপ্ন পূরণ করতে এবং আবাসন খাতে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আমরা ‘হাউজিং লোন’ নামে ২০ হাজার কোটি টাকার রিফিন্যান্সিং করার দাবি জানাচ্ছি। বর্তমানে ১৪ শতাংশের উপরে রেজিস্ট্রেশন ব্যয় রয়েছে। এটি কমিয়ে ৬-৭ শতাংশে নিয়ে আসলে আবাসন খাতে কিছুটা গতিশীলতা ফিরে আসবে। আবাসন খাত এগিয়ে গেলে নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা (বাসস্থান) পূরণে সহায়ক হবে। তার পাশাপাশি শিল্প-কারখানা বিকশিত হবে, ফলশ্রুতিতে সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।

ক্রেতাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই গত ১৭ বছর ধরে আমরা রিহ্যাব ফেয়ারের আয়োজন করে আসছি। আশা করি বিগত বছরগুলোর ধারবাহিকতায় এবারও একটি সফল ফেয়ার আমরা উপহার দিতে পারব। রিহ্যাব ফেয়ারের উদ্দেশ্যই হলো রিহ্যাব সদস্য এবং ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করা। এবারের ফেয়ার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মনের মতো ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে নিতে ক্রেতাদের সাহায্য করবে।

আবাসন ব্যবসা অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সদস্যদের থেকে জেনেছি, এই ব্যবসায় গতি এসেছে। আশা করি এই রিহ্যাব ফেয়ারের মাধ্যমে সেই গতিশীলতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

আজকের বাজার: সালি / ৩০ জানুয়ারি ২০১৮