চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ট্যানারি মালিকদের

সড়কের বেহাল দশার কারণে যানজটের ফলে কোরবানির চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ট্যানারি মালিকরা। সেক্ষেত্রে এর দায় তারা নেবেন না বলে জানিয়েছেন।

কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) নেতারা এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

২৬ আগষ্ট শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএফএলএলএফইএর চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দিলজান ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রমুখ।

এতে বলা হয়, সাভারের হেমায়েতপুর বাজার থেকে চামড়া শিল্পনগরী পর্যন্ত রাস্তাঘাট ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। শিল্পনগরীর ভেতরের সড়কের অবস্থাও শোচনীয়। ফলে কোরবানি ঈদের সময় কাঁচা চামড়াবাহী ট্রাক পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভাঙা সড়কে একটি ট্রাক আটকে গেলে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হবে। এতে ট্রাকভর্তি চামড়া পচন ধরতে পারে, যা জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কাঁচা চামড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর হাজারীবাগে নিয়ে আসেন। তবে এবার হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে। ভাঙা রাস্তাঘাটের জন্য হেমায়েতপুরে চামড়া নিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় এবার কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, পরিবহন ও সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রচণ্ড অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ট্যানারি মালিকেরা চামড়া সংরক্ষণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। তারপরও সমস্যা সমাধানে সরকার উদ্যোগ না নিলে ট্যানারি মালিকদের চেষ্টা সফল হবে না। সে ক্ষেত্রে চামড়া নষ্ট হওয়ার দায়দায়িত্ব ট্যানারি মালিকেরা নেবে না।

চামড়া ছাড়ানোর ছয় ঘণ্টার মধ্যে পরিমাণমতো লবণ না দিলে চামড়ার পচন রোধ করা যাবে না। এমন তথ্য দিয়ে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মাঝারি চামড়ার জন্য ৬ থেকে ৮ কেজি ও বড় চামড়ার জন্য ১০ থেকে ১২ কেজি লবণ দিতে হবে। চামড়ার গুণমান ভালো থাকলেই দাম ভালো পাওয়া যাবে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছর লবণের অভাবে প্রায় ৩০ শতাংশ চামড়ার গুণমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবারও লবণের দাম ইতিমধ্যে বেড়ে গেছে। তাই চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। তিনি বলেন, সারা বছর এক বস্তা (৭৫ কেজি) লবণের দাম থাকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কোরবানি ঈদের আগে সেটি বেড়ে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা হয়ে যায়। এবারও লবণের বস্তা ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা হয়ে গেছে। সরকার ৫ লাখ টন লবণ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। সেটি যাতে সময়মতো আসে, সে বিষয়ে সরকারের তদারক করা উচিত।

শাহজালাল ট্যানারির স্বত্বাধিকারী শাহজালাল মজুমদার বলেন, হেমায়েতপুরে ইতিমধ্যে প্রায় ৭০টি ট্যানারি উৎপাদন শুরু করেছে। হাজারীবাগের চেয়ে হেমায়েতপুরে তাদের সক্ষমতা দুই থেকে তিন গুণ বেড়েছে। তাই রাস্তাঘাট ঠিক থাকলে এবং পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস নিরবচ্ছিন্ন পাওয়া গেলে কোরবানির বিপুল পরিমাণ চামড়া প্রক্রিয়াকরণে কোনো সমস্যা হবে না।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২৬ আগষ্ট ২০১৭