চালু হচ্ছে গণপরিবহন, যাত্রী পরিবহনে মানতে হবে ১৪ নির্দেশনা

আগামী ৩১ মে (রোববার) থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালুর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে এক্ষেত্রে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। করোনা মোকাবিলায় সড়ক পথে গণপরিবহনে বেশকিছু নির্দেশনা মানতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এসব কারিগরি নির্দেশনা তথ্য অধিদফতরের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে চলমান সাধারণ ছুটি আর না বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ৩১ মে থেকে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সড়কে গণপরিবহন চলাচল করতে পারবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে :

১. যাত্রীবাহী পরিবহন স্টেশনে জরুরি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে, নিরাপত্তা এবং জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি মানসম্মত করতে হবে, সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে এবং মাস্ক, গ্লাভস ও জীবাণুমুক্তকরণ দ্রব্যাদির পর্যাপ্ত মজুত থাকতে হবে।

২. কর্মীদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা (Health Monitoring system) প্রতিষ্ঠা করুন, প্রতিদিন কর্মীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক অবস্থা নথিভুক্ত করুন এবং যারা অসুস্থতা অনুভব করবে তাদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

৩. বাস স্টেশনে আগত এবং নির্গত যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপার জন্য স্টেশনের তাপমাত্রা নির্ধারক যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। যথাযথ শর্তাবলি মেনে একটি জরুরি এলাকা (Emergency area) স্থাপন করতে হবে; যেসব যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রি সেঃ বা ৯৯ ফাঃ এর উপরে থাকবে তাদেরকে ওই জরুরি এলাকায় অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে, এবং প্রয়োজনমতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে।

৪. বায়ু নির্গমন পদ্ধতি যেন স্বাভাবিক থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, বাস চলাচলের সময়ে সর্বোচ্চ বায়ু চলাচল করতে দিতে হবে; যথাযথ তাপমাত্রায় বায়ু চলাচলের জন্য বাসের জানালা খুলে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

৫. জনগণের জন্য ব্যবহার্য এবং জনসাধারণের চলাচলের স্থানগুলোকে পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করণের হার বাড়াতে হবে। টয়লেটগুলোতে তরল সাবান (অথবা সাবান) থাকতে হবে, সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং হাত জীবাণুনাশক যন্ত্র স্থাপন করা যেতে পারে।

৬. যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থান, বাস কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৭. প্রতিবার বাস ছেড়ে যাবার পূর্বে বাসের ভেতরে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। জনগণের জন্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন সিটগুলোকে প্রতিনিয়ত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে, সিট কভার গুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৮. যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থানে, টিকিট কাউন্টার এবং সকল রুট এর বাসগুলোতে মাস্ক, গ্লাভস ও জীবাণুমুক্ত করণ দ্রব্যাদির পর্যাপ্ত মজুত থাকতে হবে।

৯. সম্ভব হলে সকল বাসে এবং অবশ্যই লং রুট এর সকল বাসে হাতে-ধরা থার্মোমিটার থাকতে হবে; যথাযথ স্থানে একটি জরুরি এলাকা স্থাপন করতে হবে যেখানে সন্দেহজনক উপসর্গগুলো যেমন জ্বর ও কাশি আছে এমন যাত্রীদেরকে অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে।

১০. যাত্রীদের এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে, মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং হাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর রাখতে হবে।

১১. যাত্রীদেরকে অনলাইনে টিকিট ক্রয় করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, সারিবদ্ধভাবে উঠার সময়ে এবং নেমে যাবার সময় যাত্রীদের পরস্পর হতে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।

১২. যাত্রীদের স্বাস্থ্য সচেতন করার জন্য রেডিও, ভিডিও ও পোস্টারের মাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করতে হবে।

১৩. যুক্তিসঙ্গতভাবে পরিবহনের ধারণক্ষমতা সজ্জিত করতে হবে এবং সীমিত আকারে টিকিট বিক্রয়ের মাধ্যমে যাত্রীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেসব বাস মাঝারি ও উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন এলাকা হতে ছেড়ে যাবে অথবা পৌঁছাবে অথবা ঐ এলাকা দিয়ে যাবে সেসব ক্ষেত্রে যাত্রীদের আলাদা সিটে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বসতে হবে।

১৪. যদি নিশ্চিত কোভিড-১৯ এর রোগী পাওয়া যায় স্বাস্থ্য অধিদফতর এর গাইডলাইন অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

 

আজকের বাজার / এ.এ