চীনে ভিসা আবেদন কমেছে ৯০ শতাংশ

আগে প্রতি দিন যেখানে ২৫০টি বাংলাদেশিদের চীনে ভিসা আবেদন থাকতো এখন তা কমে ২০ থেকে ২৫টি আবেদন জমা পড়ছে। অর্থাৎ আগের তুলনায় এখন প্রায় ৯০ শতাংশ কমে গেছে আবেদনের সংখ্যা। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্কে বাংলাদেশিদের চীনের ভিসা আবেদনের হাল এটি।

শুধু তাই নয় ঢাকায় চীনের নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব উড়োজাহাজ ও পর্যটন খাতে পড়েছে।

ঢাকায় চীনের দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, আগের নিয়মেই চীনের দূতাবাস খোলা রয়েছে। নিয়মিত কাজও চলছে। করোনাভাইরাসের আগে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ বাংলাদেশি ভিসা আবেদন করতেন। ফলে মাসে ভিসা আবেদনের সংখ্যা থাকত ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার। এখন দৈনিক ২০ থেকে ২৫টি ভিসা আবেদন আসছে দূতাবাসে। ফলে আগের সেই কর্মচাঞ্চল্যতা চীনা দূতাবাসের ভিসা সেকশনে নেই।

এদিকে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চীনের নাগরিকদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা সাময়িক বন্ধ করেছে ঢাকা। এ ছাড়া বাংলাদেশে যেসব চীনা নাগরিক থাকেন তাদের মাসখানেক চীনে ছুটিতে যেতে বারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশে চলমান চীনের প্রকল্পগুলোতে নতুন করে কোনো চীনা নাগরিককে না আনতে বলা হয়েছে।

ঢাকায় তাদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা বন্ধ থাকলেও চীনা নাগরিকদের নিয়মিত ভিসা খোলা থাকছে। ভিসার জন্য তারা আবেদন করতে পারবেন (বেইজিং, কুনমিং মিশনে)। সে ক্ষেত্রে আবেদনের সঙ্গে অবশ্যই একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট দিতে হবে। কোনো ধরনের অসুস্থতা থাকলে ভিসা দেয়া হবে না।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে চীনে প্রতিদিন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, চায়না সাউদার্ন ও চায়না ওয়েস্টার্ন এয়ারলাইন্স। এ ছাড়া ড্রাগন এয়ারলাইন্স সপ্তাহে চার দিন হংকংয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এর বাইরে চীন থেকে অন্য দেশ হয়ে বাংলাদেশে আসে আরও ৫টি এয়ারলাইন্স। কিন্তু গত ২১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা-গুয়াংজু রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের অন্তত ৮টি ফ্লাইট শূন্য যাত্রী নিয়ে চলেছে। আর বাকি ফ্লাইটগুলোর অবস্থাও বলতে একই রকম। তবে চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলোতে গড়ে ৫০ শতাংশ যাত্রী আসছে।

এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে যে, চীন সরকার ও জনগণ এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। চীন দূতাবাস সার্বক্ষণিক পররাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।

রোববার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, চীন খুবই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে চীনে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে।

তিনি জানান, হুবেই প্রদেশে এখনও আটকে থাকা কিছু বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনতে চীন সম্মত হয়েছে। তবে তাদের কবে আনা যাবে সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ, বিষয়টি নির্ভর করছে চীনের ওপর।

‘চীনে থাকা কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এ ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। সিঙ্গাপুর ছাড়া পৃথিবীর কোথাও আর কোনো বাংলাদেশি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হননি’ বলেও মন্ত্রী জানান।

আজকের বাজার/এমএইচ