ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীণতার বীজ রোপিত হয় : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়।
তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বীজ বপন করেছিলেন তা থেকেই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সবচেয়ে সফল ও সাহসী পথযাত্রী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এমনকি স্বাধীনতা উত্তরকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।’
মন্ত্রী আজ সোমবার রাজধানীর ডাকভবনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তরের উদ্যোগে স্মারক ডাক টিকেট অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দুরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তা-চেতনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন,ব্রিটিশ তাড়াও আন্দোলনে সক্রিয় থেকেও বঙ্গবন্ধু ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব পাশ কাটিয়ে দু’টি সা¤প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা মেনে নেননি। এরই ধারাবাহিকতায় ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত জনগণকে সংগঠিত করে জনগণকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতার লড়াই করেছেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন,এই ভূ-খন্ডের গোটা জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্ব অন্ধের মতো অনুসরণ করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে দূরদর্শিতার মধ্য দিয়ে তিনি (বঙ্গবন্ধু) জনগণকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতার লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন।
ষাটের দশকের উত্তাল আন্দোলনের দিনগুলোতে রাজপথে ছাত্রলীগের লড়াকু সৈনিক মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মেধাবী ছাত্র বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় রাজপথে ছিলেন সদা সোচ্চার।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন জোরালো করা, ’৫৬ সালে বাংলাকে রষ্ট্রাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা,’৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ এর ছয় দফা, ৬৮’র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান,সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরতে-পরতে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল প্রণিধানযোগ্য বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে, অশুভ শক্তিকে পেছনে ফেলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে, দেশগড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডাকটিকেটকে ইতিহাসের ধারক ও বাহক উল্লেখ করে বলেন, ছাত্রলীগের জন্মের ইতিহাস তুলে ধরতে স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা জাতীয় দায়িত্ব।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী ডাকঘরের রূপান্তর আজ সময়ের দাবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাকঘরকে প্রযুক্তি বান্ধব শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে বদ্ধপরিকর। মন্ত্রী ডাক অধিদপ্তরকে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তরের দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্টদের ডিজিটাল ডাকঘর নির্মাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ডাকঘরে কোন দুর্নীতি, অন্যায় কিংবা কোন প্রকার অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।
অন্যান্যের মধ্যে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহসীনুল আলম ও ডাক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হারুনুর রশিদ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
পরে মন্ত্রী স্মারক ডাকটিকেট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত ও ডাটা কার্ড প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বিশেষ সীলমোহর ব্যবহার করেন।