চাহিদার ৯৮% ওষুধই দেশে উৎপাদিত

ওষুধ শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প সেক্টরে পরিণত হয়েছে। দেশীয় চাহিদার ৯৮ শতাংশের বেশি ওষুধ বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে।

৬ জুন মঙ্গলবার জাতীয় সংসদকে এই তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আন্তরিকতা ও উদারনীতির ফলে ওষুধ শিল্প বাংলাদেশ অন্যতম শিল্প সেক্টরে পরিণত হয়েছে।

জাসদের সংসদ সদস্য বেগম লুৎফা তাহেরের তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার ওষুধ এবং ওষুধের কাঁচামাল বিশ্বের ১২৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত ওষুধ রপ্তানির পরিমাণ ও বাংলাদেশের ওষুধ ক্রেতা দেশের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

স্বাস্থ্যামন্ত্রী বলেছেন, জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার কঠোরতা অবলম্বন করেছে। তিনি বলেন, ভেজাল ও নিন্মমানের ওষুধ বিক্রয় ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বদাই সচেষ্ট রয়েছে।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং গাইডলাইন) যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় এবং ভেজাল ও নিন্মমানের ওষুধ উৎপাদনের দায়ে এ পর্যন্ত ৮৬টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ৬১টি পদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল এবং ১৪টি পদের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক বাতিল করাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিস্ট ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গেও বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ভেজাল, নকল ও মানহীন ওষুধ বিক্রিবন্ধে দেশের বিভাগীয় শহরসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মডেল ফার্মেসি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং সরকার ইতিমধ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে ১ শত ৫০টি ফার্মেসিকে মডেল ফার্মেসি হিসাবে অনুমোদন প্রদান করেছে। মডেল ফার্মেসি থেকে জনগণ মানসম্মত ওষধ কেনার পাশাপাশি ঔষধের ব্যবহারবিধি সর্ম্পকে সঠিক ধারণা পাবে। সারা দেশব্যাপী মডেল ফার্মেসি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ের আ্যকসেস টু ইনফরমেশন প্রোগামের সহায়তায় ঔষধের বিরুপ প্রতিক্রিয়া, নকল ওষধ চিহ্নিতকরন এবং ওষধের নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে বিক্রয়ের বিষয়ে অনলাইনভিত্তিক রিপোর্টিংয়ের জন্য ওয়েব পোর্টাল ও মোবাইল এপ্লিকেশন শীর্ষক একটি প্রকল্পের কার্যক্রম বর্তমানে পাইলটিং পর্যায়ে রয়েছে। এই সফটওয়ারের মাধ্যমে জনগণ ঔষধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া বিষয়ে রিপোর্ট করতে পারবে। ওষুধের নির্ধারিত মূল্য যাছাই করা সম্ভব হবে। দেশে যেকোনো এলাকায় প্রাপ্ত ভেজাল ও নকল ওষুধ সর্ম্পকে স্বল্প সময়ে নিশ্চিত হতে পারবে এবং ওষুধ সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ দ্রুত দাখিল করতে পারবে।

সিলেট ৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদে জানান, হিমোফিলিয়া ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে প্রায় ৩ হাজার রোগী আছে। হিমোফিলিয়া রোগীদের চিকিৎসা অত্যান্ত জটিল ও ব্যায়বহুল। তবেদেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে। কিন্তু বিশেষায়িত চিকিৎসা জটিল, ব্যায়বহুল ও বিশেষ প্লান্টের মাধ্যমে চিকিৎসা দিতে হয় বিধায় ভবিষ্যতে হিমোফিলিয়া রোগীদের চিকিৎসা সুবিধার্থে বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনের চিন্তা-ভাবনা সরকারের রয়েছে।

চট্টগ্রাম ৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশর সকল জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবাপ্রদান করা সরকারের একটি প্রতিশ্রুতি। তদপ্রেক্ষিতে সকল উপজেলাগুলিতে এক্স-রে মেশিন সরবারহ করা চলমান রয়েছে।

আজকের বাজার:এএন/এলকে/ ৬ জুন ২০১৭