জানুয়ারির মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন আনার ব্যাপারে আশাবাদী দেশের গ্লোব বায়োটেক

খরগোশ ও ইদুরের শরীরে প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভালো সাফল্য পাওয়ার কথা জানিয়ে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পথে থাকা দেশিয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড বলছে, হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমতি দ্রুত পাওয়া গেলে আগামী জানুয়ারির মধ্যে ‘বিএনকোভিড’ নামের ভ্যকসিনটি তারা বাজারে আনার ব্যাপারে আশাবাদী।

সোমবার বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা ভ্যাকসিনটি আবিষ্কারের প্রক্রিয়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। তবে প্রয়োজনীয় বাকি প্রক্রিয়াটুকু সম্পন্ন করতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।

রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেকের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা আশা করি সরকার আমাদের পাশে দাঁড়াবে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।’

‘আমরা যদি সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা করতে পারি, আমরা আশা করি, আমরা আগামী জানুয়ারির মধ্যেই দেশের জনগণকে আমাদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করতে সক্ষম হব, বলেন তিনি।

গ্লোব বায়োটেক চেয়ারম্যান জানান, প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলো থেকে বোঝা যায় যে তাদের ভ্যাকসিনটি বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিনগুলোর মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘আমরা যদি এখন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে পারি, তবে আমরা স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে এই ভ্যাকসিনটি রপ্তানি করতে পারি,’ বলেন তিনি।

করোনার ভ্যাকসিনের জন্য সরকার ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে উল্লেখ করে গ্লোব কর্তৃপক্ষ বলেন, সরকার যদি প্রয়োজনীয় সহায়তার হাত বাড়ায় তবে তারা ‘বিএনকোভিড’ ভ্যাকসিন রপ্তানি করে ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আয় করতে সক্ষম হবে।

গ্লোব বায়োটেকের প্রধান নির্বাহী (সিইও) কাকন নাগ বলেন, তাদের ভ্যাকসিনটি ইঁদুরের ওপর প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলোতে ইতোমধ্যে নিরাপদ এবং কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এবং প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম, biorxive.org এ প্রকাশিত হয়েছে।

‘আমরা এখন কনট্রাক্ট রিসার্চ ওরগানাইজেশন (সিআরও) এর সাথে একত্রে ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনার জন্য প্রোটোকল প্রস্তুত করছি,’ বলেন তিনি।

কাকন জানান, শিগগিরই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রোটোকল দিয়ে সিআরও বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কাছে আবেদন করবে। বিএমআরসি থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ারের জন্য আবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) কাছে আবেদন করা হবে।

বাংলাদেশে এখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে উল্লেখ করে কাকন বলেন, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতে দেখা যাচ্ছে এর জন্য ভাইরাসের ‘ডি৬১৪ জি’ রূপটি শতভাগ দায়ী। ‘আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তির সাহায্যে ‘বিএনকোভিড’ ভ্যাকসিনই ‘ডি৬১৪জি’ এর বিরুদ্ধে একমাত্র এবং প্রথম ভ্যাকসিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কার্যকর এবং নিরাপদ ভ্যাকসিনটি বাজারে আনার জন্য যা কিছু করা দরকার, আমরা তা করেছি। তবে পরবর্তী পদক্ষেপ এবং চূড়ান্ত সাফল্য সরকার এবং দেশের জনগণের সহযোগিতার উপর নির্ভর করে।’

এর আগে ২ জুলাই গ্লোব বায়োটেক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পথে রয়েছে এবং তাদের প্রাথমিক পরীক্ষা সফল হয়েছে।