টানা ষষ্ঠ দিনেও আন্দোলনে পোশাক শ্রমিকরা, ৫০ কারখানা ছুটি

বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে ও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে রাজধানী ঢাকা, গাজিপুর, সাভার ও আশুলিয়ায় টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা।

শনিবার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশসহ অনেক শ্রমিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে অন্তত ৫০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর, আনসার ক্যাম্প ও কল্যাণপুরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন শ্রমিকরা। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।

এছাড়া মিরপুরের কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ায়ও সড়কে অবস্থান নেন পোশাক শ্রমিকরা। এসময় তারা গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন এবং ফুটপাতের বেশ কিছু দোকানপাট ভাঙচুর করেন।

গাজীপুরে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার টার্গেট ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-গাজীপুর সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

এছাড়া মোগরখাল এলাকায় বিসিএল কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিলে তাদের সাথে মালিক পক্ষের লোকজনের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

নগরের কোনাবাড়ী বিসিক শিল্প এলাকায় কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করতে চাইলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।

শ্রমিক আন্দোলনের কারণে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া, কোনাবাড়ী ও মোগরখাল এলাকাসহ আশপাশের এলাকার অন্তত ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে সাভার ও আশুলিয়াতেও টানা ষষ্ঠ দিনে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশসহ অন্তত ৩০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, বিক্ষোভকারীরা আশুলিয়ার জামগড়া ছয়তলা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হন।

একই দাবিতে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। এ সময় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ১০ শ্রমিক। ঘটনার পর আশপাশের ২০টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাভারে বিভিন্ন পোশাক কারখানার সামনে টহল দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এছাড়া অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

শিল্প পুলিশের পরিচালক সানা শামিনুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি পোশাক কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে পুলিশের জলকামানসহ সাজোয়া যান।

এদিকে সাভার ও আশুলিয়ায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ