টেকসই সাপ্লাই চেইন ও পানির সঠিক ব্যবহারের উপর এইচএসবিসি ও ওয়াটারএইডের আলোচনা

বাংলাদেশে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা খাতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে এক সমন্বিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাকিং কর্পোরেশন (এইচএসবিসি)। ওয়াটার এইড বংলাদেশের সহযোগিতায় মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ রাজধানীর একটি হোটেলে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ৬ বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
সবার জন্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এ খাতের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সমাধান নিয়ে বেসরকারি খাতে আলোচনা গতিশীল করতে এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগটি নেয়া হয়।
টেকসই উপায়ে সাপ্লাই চেইন কার্যক্রম পরিচালনায় কাজ করে যাচ্ছে এইচএসবিসি; এর অংশ হিসেবেই এ আয়োজন। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি এবং ওয়াটার এইড ও এইচএসবিসি’র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এসডিজি অ্যাফেয়ার্স’র প্রিন্সিপাল কো-অর্ডিনেটর মো: আবুল কালাম আজাদ।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ফ্রাঁন্সওয়া দ্য ম্যারিকো বলেন, “বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক ব্যাংক হিসেবে এইচএসবিসি গ্রাহকদের পাশে এমনভাবে দাঁড়াতে চায় যেন তারা টেকসই সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা গড়ে তুলে নিজেদের কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে পারে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে পানি ব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের কাজের পরিবেশ ও জীবনধারণের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সঠিক পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা সেবা প্রদানের উদ্দেশে আমার ওয়াটার এইড’র সাথে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চাই।”
ওয়াটার এইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. খাইরুল ইসলাম তার মূল প্রবন্ধে বলেন, “বৈশ্বিক পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এবং থাকা উচিত। এতে ব্যবসয়িক ক্ষেত্রও লাভবান হবে এবং নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এক্ষত্রে ব্যবসায়িক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের বিকল্প নেই।”
অনুষ্ঠানে আয়োজিত প্যানেল ডিসকাশনে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এসডিজি অ্যাফেয়ার্স’র প্রিন্সিপাল কো-অর্ডিনেটর মো: আবুল কালাম আজাদ, এইচএসবিসি এশিয়া প্যাসিফিক’র গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজার, হেড অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড হেড অব স্ট্রাটেজি অ্যান্ড প্ল্যানিং ম্যাথিউ কে লবনার, ইউনিলিভার বাংলাদেশ’র সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর

কেদার লেলে, ইউএনডিপি বাংলাদেশ’র ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ কাইয়োকো ইয়োকোসুকা, মোহাম্মাদী গ্রুপ’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. রুবানা হক এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল ড. সুলতান আহমেদ। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়’র ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত।
বাংলাদেশ, ঘানা, ভারত, নেপাল, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তান- এই ছয়টি দেশে বৈশ্বিক পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সংকট মোকাবেলায় যৌথভাবে কাজ করছে ওয়াটারএইড ও এইচএসবিসি। ২০১২ সালে চালু হওয়া এইচএসবিসি ওয়াটার প্রোগ্রামের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে উভয় প্রতিষ্ঠান। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিশ্বের ১.৬৫ মিলিয়ন মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও ২.৫ মিলিয়ন মানুষ পয়ঃনিষ্কাশন বা স্যানিটেশন সুবিধা পাচ্ছে। বাংলাদেশে ২০১২ সাল থেকে এখাতে ৫.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে যা’র ফলসরূপ ২৬০, ৩৬৯ মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও ৪৯০,২৪৪ মানুষ পাচ্ছে পয়ঃনিষ্কাশন বা স্যানিটেশন সুবিধা। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের তৈরি পোশাক শিল্পে টেকসই সাপ্লাই চেইন এবং কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সার্বিক উন্নয়নের উদ্দেশে ২০১৮ সালে একটি নতুন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।