টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করা প্রচুর চ্যালেঞ্জ: জব্বার

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, এ খাতের কাজ প্রচুর চ্যালেঞ্জিং। আমরা অনেক কাজ করেছি, তবে এখনও অনেক কাজ বাকি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের জন্য যেখানে যেখানে যেই মন্ত্রণালয়ে যাওয়া দরকার সেখানেই যাবো। কোনো কাজেই পিছুপা হবো না।
তথ্য প্রযুক্তি খাতে মেয়েরা অসাধ্য সাধন করেছে মন্তব্য কওে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা মেয়েদের।
সম্প্রতি রাজধানীর কাওরানবাজারে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে সভাকক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে মেয়েদের সংখ্যা বৃদ্ধি বিষয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক নামক একটি সংগঠন।
বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘মেয়েরা ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম হাতিয়ার। বিষয়টি অনুধাবন করে সরকার ‘শি পাওয়ার’ প্রকল্পের অধীনে ১০ হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এরা ঘরে বসেই সন্তান প্রতিপালনের পাশাপাশি কর্মজীবনেও স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মাছ যেমন ডিম ছাড়ার জন্য হালদা নদীর উপযোগী পরিবেশে ছুটে আসে, আমরাও দেশটাকে মেয়েদের জন্য তেমনি একটি নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আর এই যাত্রায় সফল হতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। নারীদেরকে বাবা বা স্বামীর পরিচয়ে নয় স্ব-নামে বিকশিত হবার স্বপ্নে এগিয়ে যেতে হবে।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি এমন এক যায়গা যেখানে মেয়েদের কাজ করার সুযোগ অন্য যে কোন জায়গার চেয়ে বেশি। কারণ এই খাতে কাজ করতে মেয়েদের ঘরের বাইরে যেতে হয়না। অনেক মেয়েই ঘরে বসে তিন থেকে চার হাজার ডলার আয় করছে।
তিনি বলেন, মেয়েদেরকে আমরা যদি কাজের পরিবেশ করে দিতে পারি তাহলে তারা অসাধ্য সাধন করবে। কারণ তাদের কাজের মনোযোগ অনেক বেশি। একটা জিনিস মেয়েদের একবার দেখিয়ে দিলে দ্বিতীয় বার দেখাতে হয় না। মেয়েরা কাজের বিষয়ে অনেক বেশি আন্তরিক। তারা অজুহাত তৈরি করে না। বর্তমানে মায়েদের ডিজিটাল করা বেশি দরকার। কারণ মা যদি ডিজিটাল হয় তাহলে বাচ্চারাও ডিজিটাল হবে।
পরিবার থেকেই মেয়েদের শিকল বন্ধ করে রাখা হয় মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘মেয়েদের সাহস দেয়া হয় না, তারা পারবে-এই কথাটি বলা হয় না। তাদের জন্মের পর থেকেই পঙ্গু করে দেয়া হয়। তাদের বলা হয়, তোমার জন্ম হয়েছে চাকরি না করার জন্য। তোমার জন্ম হয়েছে স্বামীর সেবা করার জন্য, তোমার জন্ম হয়েছে রান্না করার জন্য। তারা কাজে যেতে চাইলে নানা বদনাম রটানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, মেয়েরা দেশের পোশাকশিল্পকে দাঁড় করিয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তি এমন এক জায়গা, যেখানে মেয়েদের কাজ করার সুযোগ অন্য জায়গার চেয়ে অনেক বেশি। মেয়েরা বাসায় বসে অনেক কাজই করতে পারে। ছেলে-মেয়েদের দেখা শোনার পাশাপাশি তারা ল্যাপটপ নিয়ে ঘরে বসে কাজ করতে পারে। বর্তমানে মেয়েরা ঘরে বসেই তিন থেকে চার হাজার ডলার আয় করছে।
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মরগান স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারি অধ্যাপক ড. সামিনা এফ সাইফুদ্দিন। বিডিও এসএন সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন দোহাটেক নিউ মিডিয়ার চেয়ারম্যান ও উইমেন ইন টেকনোলজি সংস্থার প্রধান লুনা সামসুদ্দোহা, নর্থ সাউথ এসিএম ডব্লিউ সমন্বয়ক তামান্না মোতাহার, সেন্ট্রাল ওমেন ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের প্রধান শাহানাজ পারভীন প্রমুখ।
আজকের বাজার: সালি / ৩১ জানুয়ারি ২০১৮