ডাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু

বাংলাদেশে আজ প্রায় তিন দশক বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮ টা থেকে ডাকসু কেন্দ্রীয় সংসদ এবং হল সংসদগুলোর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে দুপুর দুইটা পর্যন্ত।

পুরো ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

সবশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। স্বাধীন বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট সাতবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন।

সে সময় বাংলাদেশে ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদগুলো ছিল নানা ইস্যুতে জাতীয় রাজনৈতিক আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি, সেজন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলোর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।

কিন্তু সে পরিস্থিতি এখন একেবারেই বদলে গেছে। সে কারণেই ২৮ বছর পরের এই ডাকসু ও হল ছাত্র-সংসদগুলোর নির্বাচনকে ঘিরে নতুন করে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

এ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক নিয়ে ছাত্র সংগঠন বেশ কিছু আপত্তি প্রকাশ করেছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সুষ্ঠুভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব পদক্ষেপ তারা নিয়েছেন।

যদিও নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে এক দলের পোস্টার ছিঁড়ে অন্যদলের পোস্টার টানানো, ব্যানার ছেঁড়াসহ আরও নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তবে নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে জিরো টলারেন্স অবস্থানে থাকার কথা জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক আবদুল বাসির।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “আমরা ছাত্রদের বলেছিলাম যে তাদের কোন অভিযোগ থাকলে তারা যেন সেটা আমাদের লিখিত আকারে জানায়, কিন্তু এ পর্যন্ত কেউ আমাদের কাছে কোন অভিযোগ লিখিতভাবে জানায়নি।”

কিছু ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং প্রার্থীরা, নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের পরিবর্তে স্টিলের ব্যালট বাক্সের ব্যবহার, কখন এই ব্যালট বাক্স পাঠানো হচ্ছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

এ ব্যাপারে আব্দুল বাসির জানান, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নির্বাচন এই অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সেই সম্পন্ন হয়। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির একটি অংশ।”

আবার এমন অভিযোগও রয়েছে যে, একটি বিশেষ সংগঠনের প্রার্থীর প্যানেলকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বিভিন্ন কৌশল করছে।

এইসব অভিযোগকে সামনে রেখে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স কেন রাখা হল না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমাদের হাতে পুরো প্রক্রিয়া নতুন করে সাজানোর মতো পর্যাপ্ত সময় ছিল না।

ভোট গ্রহণের সময় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ৬ ঘণ্টা ভোটগ্রহণ চলবে।

এই অল্প সময়ের মধ্যে ৪৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভোটগ্রহণ সম্ভব হবেনা বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

বাসির মনে করেন, এই সময়ের মধ্যেই সব শিক্ষার্থী ভোট দিতে পারবেন।

“সবার ভোট নিশ্চিত করতে আমরা বুথের সংখ্যা বাড়িয়েছি। তাই আশা করছি যে একটা দেড়টার মধ্যেই সব ভোট গ্রহণ সম্ভব হবে।”

ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনার সময় নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রতিটি দলের এজেন্ট উপস্থিত থাকবেন বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

সূত্র – বিবিসি