ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদ সাময়িক বরখাস্ত

ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করে।

এর আগে রোববার দুপুরে দুদক পরিচালক মো. ইউসুফের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন ও সালাউদ্দিন আহমেদ।

অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানোর অভিযোগে বজলুর রশীদ ও তার স্ত্রীকে রোববার সকাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিরুদ্ধে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অবৈধ লেনদের তথ্যের সত্যতা পায় সংস্থাটি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সম্মিলিত জেলা কার্যালয়-১ এ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কারা ক্যাডারের ১৯৯৩ ব্যাচের কর্মকর্তা বজলুর রশীদ এখন ঢাকায় কারা সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিআইজি হিসেবে এর আগে সর্বশেষ রাজশাহীতে ছিলেন।

জেল সুপার পদে বরগুনায় কর্মজীবন শুরু করে সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, কক্সবাজার ও খাগড়াছড়ি এবং জ্যেষ্ঠ জেল সুপার হিসেবে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত ছিলেন তিনি।

তথ্য মতে, ঘুষের টাকা লেনদেন করতে ডিআইজি বজলুর রশীদ প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে মোবাইল ফোনের সিম তোলেন। সরাসরি টাকা না পাঠিয়ে ঘুষ চ্যানেলের সোর্স ব্যবহার করেন তিনি। এর মধ্যে এসএ পরিবহনের মাধ্যমে ঘুষের টাকা কুরিয়ার করার ২৪টি রসিদের কথা উল্লেখ করা হয়। এসব রসিদে অঙ্কের যোগফল প্রায় কোটি টাকা।

এছাড়া কারা অধিদপ্তরে স্টোরকিপার, অফিস সহকারি, গাড়িচালক, দর্জি মাস্টারসহ বিভিন্ন পদে বেশ কিছুসংখ্যক লোক নিয়োগের ক্ষেত্রেও ঘুষ লেনদেনে ডিআইজি প্রিজন ও তার স্ত্রী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে সূত্র জানায়, তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারের নামে ২০১৭ সাল থেকেই মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে গত ২০ জানুয়ারি ৯৫৮৮২৫ রসিদে ৫০ হাজার টাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ৯৫৮১০৮ রসিদে ১ লাখ ২ হাজার টাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ৯৫৮১৪৩ রসিদে ২ লাখ টাকা, ২০ মে ৯৫৯০৬০ রসিদে ১ লাখ টাকা, ২৩ মে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, ২৭ মে ৯৫৯১৪১ রসিদে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৫০ টাকা, ৬ জুলাই ৯৫৯৪৬৯ রসিদে ৩ লাখ টাকা, ১৪ জুলাই ৯৫৮৯৭২ রসিদে ১ লাখ টাকা, ২২ জুলাই ৯৫৯৫১২ রসিদে ১০ লাখ ১০ হাজার, ১৬ জুলাই ৯৫৯৪৭০ রসিদে ৩ লাখ টাকা, ৪ মার্চ ৯৫৮২১৮ রসিদে ২ লাখ টাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর ৯৫৯৫৪১ রসিদে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৪ অক্টোবর ৯৫৯৭৪৯ রসিদে ৬ লাখ টাকা স্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর ৯৫৮৪৮১ রসিদে ২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ১৯ মার্চ ৯৫৮৩৪৫ রসিদে ৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, ১১ এপ্রিল ৮৪২১২৮ রসিদে ৩ লাখ টাকা, ২০ নভেম্বর ৮৪২২৩৯ রসিদে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ৯৫৭৬৪০ রসিদে (তারিখ অস্পষ্ট) ২ লাখ টাকা, ২০১৭ সালের ৪ মার্চ ৯৫৮১৬৯ রসিদে ৬ লাখ ৮ হাজার টাকা, (১৬ অক্টোবর সাল অস্পষ্ট) ৮১৭২৩৮ রসিদে ১ লাখ টাকা, (৮ অক্টোবর সাল অস্পষ্ট) ৮১৭১৫৭ রসিদে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৯৫৯৭১৩ রসিদে (তারিখ অস্পষ্ট) ৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর ৮১৭২১৭ রসিদে ৩ লাখ টাকা, ১২ অক্টোবর ৮১৭২০৭ রসিদে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা লেনদেন করা হয়।

আজকের বাজার/এমএইচ