ডিসেম্বরে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব

গত ২২ অক্টোবর দুপুরে রাজধানীর অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব’ এর বাতিল খবর জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের লিটু। তবে তার সে কান্না বৃথা যায়নি, বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব হতে যাচ্ছে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই।
এ বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধানমণ্ডির আবাহনী মাঠে হবে পাঁচদিনের এই আয়োজন। মঙ্গলবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ খবর জানান তিনি। আর বলেন, ‘এই বছর এ উৎসবে উপমহাদেশের যেসব শিল্পীর আসার কথা ছিল, তাদের ‘৮০ শতাংশ’ এই আয়োজনে যোগ দেবেন।’
তিনি জানান, বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব আয়োজনের জন্য তারা প্রথমে রাজধানীর মিরপুরের ইনডোর স্টেডিয়ামটি বরাদ্দ চেয়েছিলেন। তাতে অর্থমন্ত্রীরও সায় ছিল। কিন্তু ক্রিকেটের ভরা মৌসুমে এ আয়োজন সেখানে করলে টার্ফ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যার কারণে তারা ধানমণ্ডির আবাহনী মাঠে আয়োজনটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই এরজন্য অনুমতি নেওয়াও হয়ে গেছে। আগামী সাতদিনের মধ্যেই একটি সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ২৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে আবুল খায়ের লিটু বলেছিলেন, ‘আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। আগামী বছর যেন আমরা এ ফেস্টিভ্যালটি আবারও করতে পারি। এর ধারাবাহিকতা একবার হারিয়ে গেলে আমরা শিল্পীদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলব। পাশাপাশি শ্রোতা-দর্শক এবং গান পিপাসুদের কাছেও।’


এদিকে এর আগে এ বছরই গত ২৩ নভেম্বর থেকে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের ষষ্ঠ আসরটি বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু সেনা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতি না মেলায় সেই আয়োজনটি এ বছর করা হবে না বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
সে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘এবার উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করার পর বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আর্মি স্টেডিয়াম ব্যবহারের জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ড গত ৩১ অগাস্ট এক চিঠিতে জানায়, ওই সময় পোপের বাংলাদেশ সফরের সূচি থাকায় আর্মি স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয়। এরপর রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের ঢাকায় আসার কথা ৩০ নভেম্বর। যেহেতু তার সফরের প্রধান অনুষ্ঠানটি আর্মি স্টেডিয়ামে হচ্ছে না, সেহেতু ৯ সেপ্টেম্বর সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডকে আবারও চিঠি দিয়ে স্টেডিয়াম বরাদ্দের অনুরোধ করেছিল বেঙ্গল। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও একই জবাব আসে।’
পরে স্থান নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় কাজ এগিয়ে রাখার স্বার্থে বিকল্প স্থান চিহ্নিত করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে বিদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তারা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে নির্ধারিত করও জমা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিকল্প স্থানেও সারা রাত অনুষ্ঠান করার অনুমতি পাননি আয়োজকরা।
শাস্ত্রীয় সংগীতকে সাধারণ মানুষ ও তরুণদের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আর্মি স্টেডিয়ামে গত পাঁচ বছর এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। কিন্তু এবারই প্রথম এই ধারাবাহিক উৎসব বাতিল হল। উপমহাদেশীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের রথী-মহারথীরা নিয়মিতই এতে অংশ নেন। বাংলাদেশ ছাড়াও বিদেশের দর্শকের কাছে আয়োজনটি সমাদৃত হয়েছিল।
আজকের বাজার: সালি/ ১৪ নভেম্বর ২০১৭