ডেঙ্গু রোধে চিরুনি অভিযানে নামছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে সুরক্ষা দিতে আগামীকাল থেকে চিরুনি অভিযানে নামছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আর এ অভিযান সর্বাত্মকভাবে সফল করতে নবনির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার ডিএনসিসির দুইটি পৃথক অনলাইন সভায় এ আহ্বান জানান সদ্য দায়িত্ব নেয়া ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। অনলাইন সভায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর, ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগের প্রধান উপস্থিত ছিলেন। এটিই নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রথম সভা।

সভার শুরুতে কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন নতুন মেয়র। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য নির্বাচনী ইশতিহার বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরবাসীর কল্যাণ করা। আমাদের কাছে নগরবাসীর অনেক প্রত্যাশা। তাই কথায় নয় কাজে প্রমাণ দিতে হবে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে সাংবাদিক ও জনগণ কেউই ছাড় দেবে না।

উন্নয়নকাজসমূহ গুণগতমান বজায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার তাগিদ দেন মেয়র। কাউন্সিলরদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণ যেন ঠিক মতো হয়, সেজন্য প্রত্যেক কাউন্সিলর ব্যক্তিগতভাবে মনিটর করবেন। নির্ধারিত গুণ ও পরিমাণ বজায় রেখে মশার কীটনাশক ছিটানো হচ্ছে কিনা তা আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেক কাউন্সিলর তার ওয়ার্ডের মশক নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী থাকবেন এবং তাকেই জবাবদিহি করতে হবে।

তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে ডিএনসিসির অঞ্চল ১ থেকে ৫ এর প্রতিটি অঞ্চল থেকে ১টি করে ওয়ার্ডে এ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। রমজান ও করোনাভাইরাসের কথা বিবেচনায় নিয়ে ঈদের আগ পর্যন্ত মোট ৫টি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে ঈদের পরে ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে।

করোনা মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ত্রাণ বিতরণে জিরো টলারেন্স। যাদের প্রকৃতপক্ষে ত্রাণের প্রয়োজন, তাদের ত্রাণ দিতে হবে। ত্রাণ নিয়ে কোনোরকম নয় ছয় সহ্য করা হবে না।

প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের মাধ্যমে যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হয়, একই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরের মাধ্যমে তার ২০ শতাংশ ত্রাণ বিতরণ করার নির্দেশ তিনি দেন।

এ সময় তিনি কাউন্সিলরদেরকে প্রতি মাসে একবার ফেসবুক লাইভে এসে জনগণের মুখোমুখি আসার আহবান জানান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ওয়ার্ড কাউন্সিলর মইজুর রহমান, আফসার উদ্দিন খান, ইসহাক মোল্লা, লিয়াকত আলী, মতিউর রহমান, আবুল কাশেম মোল্লা, রাজিয়া সুলতানা ইতি, দেওয়ান আবদুল মান্নান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মঞ্জুর হোসেন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, আগামীকাল থেকে চিরুনি অভিযানে প্রাপ্ত এডিস মশার বংশবিস্তারের বিস্তারিত তথ্য (ছবি, ভবন, প্রতিষ্ঠানের মালিক, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি) সঙ্গে-সঙ্গে ডাটাবেইজে সংরক্ষণ করা হবে। এর ফলে ডিএনসিসি এলাকার কোথায় কোথায় এডিস মশার বংশবিস্তার ঘটছে তার একটা তালিকা পাওয়া যাবে। সব তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখতে পাবেন। যা পরবর্তীতে তা মনিটর করা সহজ হবে।