ঢাকার আরও ৫ এলাকা পাচ্ছে প্রিপেইড গ্যাস মিটার

চলতি বছরের মধ্যে রাজধানী ঢাকার আরও পাঁচ এলাকায় বাসাবাড়ির গ্রাহকরা প্রিপেইড গ্যাস মিটার পেতে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত অর্থায়ন অনুমোদন করেছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা(জাইকা)। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মোহাম্মদ আল মামুন ইউএনবিকে বলেন,‘চলমান প্রকল্পে আরও ১ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার বসানোর অর্থায়নের জন্য আমরা ইতোমধ্যে জাইকার অনুমোদন পেয়েছি।’ তিনি জানান, এখন সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনার (ডিপিপি) মাধ্যমে পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তিতাস গ্যাস কর্মকর্তারা জানান, সংস্থাটি প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় হ্রাসের লক্ষ্যে ঢাকার নতুন পাঁচটি এলাকায় প্রিপেইড গ্যাস মিটার প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এলাকাগুলো হলো- পল্টন, রমনা, নিউ মার্কেট, খিলগাঁও এবং সেগুনবাগিচা। এগুলো মূলত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে শহরের কেন্দ্রীয় অংশে অবস্থিত।

‘আশা করি পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিপির অনুমোদন পেয়ে যাব,’ উল্লেখ করে আল মামুন বলেন, আগামী জুলাই থেকে শুরু করে পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে অতিরিক্ত ১ লাখ প্রিপেইড মিটার বসানোর পরিকল্পনা আছে তিতাস গ্যাসের। কর্মকর্তারা জানান, গ্যাস চুরি ও অপচয় রোধ করার লক্ষ্যে ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস বাসাবাড়িতে ইতোমধ্যে ২ লাখ প্রিপেইড মিটার বসিয়েছে। চলমান প্রকল্পের আওতায় মূলত গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, বাড্ডা, তেজগাঁও, ক্যান্টনমেন্ট, কাফরুল, খিলক্ষেত, উত্তরা ও মিরপুরের মতো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এলাকাগুলোতে প্রিপেইড মিটার বসানো হয়েছে। এসব এলাকার অনেক গ্রাহক জানিয়েছেন যে তারা প্রিপেইড গ্যাস মিটারে উপকার পাচ্ছেন। তারা মিটারহীন ব্যবস্থায় মাসে যে পরিমাণ অর্থ দিতেন এখন তার এক-তৃতীয়াংশেরও কম দেন।

তিতাস গ্যাসের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির আওতাধীন এলাকায় ২৭ লাখ ৮৩ হাজার গ্রাহক রয়েছে। তার মধ্যে ২৭ লাখ ৬৪ হাজার গ্রাহক বাসাবাড়ির। জাইকার অর্থায়ন করা প্রকল্পের অধীনে তিতাস গ্যাস ঢাকার কিছু এলাকায় ২০১৭ সালে প্রিপেইড মিটার বসানো শুরু করে। প্রকল্পটির ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্প্রতি সমাপ্ত হয়। কর্মকর্তারা জানান, জাপানি ঠিকাদার টোয়োকিকি কোম্পানি লিমিডেট আগের ২ লাখ মিটার সরবরাহ ও বসানোর কাজ করে। এখন তারাই একই শর্ত ও মূল্যে অতিরিক্ত ১ লাখ ২০ হাজার মিটারের কাজ পেয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭১২ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিল। মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

কর্মকর্তারা জানান, যখন তিতাস গ্যাস মিটার বসানো শুরু করে তখন দেখা যায় অনেক বাসাবাড়িতে মাটির নিচের লাইনে ত্রুটি রয়েছে। কিছু সংযোগে ফুটো ছিল। যার ফলে প্রকল্পটি শেষ করতে দেরি হয় বলে তিতাস গ্যাসের এক কর্মকর্তা জানান। তিতাস গ্যাস প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, প্রিপেইড গ্যাস মিটার বসানো খুব সংবেদনশীল কাজ। ‘যদি সার্ভিস লাইন বা বাসাবাড়ির সংযোগের কোনো একটিতে ফুটো থাকে তাহলে মিটার কাজ করবে না। যার ফলে, কোনো ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ ধরা পড়লে আমাদের প্রিপেইড মিটার বসানো স্থগিত রাখতে হয়।’ সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান