যাতায়াতে ফিরেছে স্বস্তি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৬টি সেতু যান চলাচলে উন্মুক্ত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতায়াতে ফিরেছে স্বস্তি। মহাসড়কের ৬টি সেতু খুলে দেয়ায় সুফল পেতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। সেতু এলাকায় পার হতে আগে যেখানে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগতো, এখন ৭ থেকে ৮ মিনিটেই সে পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব হচ্ছে। সেতুগুলো চালু হওয়ায় এখন ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টায় চট্রগ্রাম ও দেড় ঘণ্টায় কুমিল্লায় পৌছতে পারছেন যাত্রীরা।
মহাসড়কে চলাচলকারী এসএ পরিবহনের চালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিগত কয়েক মাস ধরে কাঁচপুর থেকে মদনপুর এবং মোগড়াপাড়া থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়ে থাকতে হতো। কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় মেঘনা, গোমতী, কাঁচপুর সেতুগুলো চালু হওয়ায় মাত্র ৮ মিনিটে সেতু পার হয়ে গৌরীপুরে আসা যাচ্ছে। কোনও যানজটে পড়তে হচ্ছে না। স্বস্তি এসেছে পরিবহন চালক, যাত্রী ও এলাকাবাসীর। যার ফলে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৫ কোটি মানুষের ভাগ্য বদলে নয়াদিগন্ত উন্মোচন হয়েছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা, গোমতী ও কাঁচপুরের প্রথম ও দ্বিতীয় সেতুসহ ছয় সেতু খুলে দেওয়ায়। এ সেতুগুলোকে ঘিরেই যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। মেঘনা, গোমতী ও কাঁচপুরের পুরাতন তিনটি সেতু সংস্কার কাজ শেষে চলতি (২০২০) বছরের ৫ জানুয়ারি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পাশাপাশি আরো তিনটি নতুন সেতু নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। দেশের অধিকাংশ শিল্প-কারখানা ঢাকা-চট্টগ্রামে অবস্থিত। কিন্তু মহাসড়কের কাঁচপুর, মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী ব্রীজ এলাকায় যানজটের কারণে প্রতিদিনই দুর্ভোগ লেগে থাকতো। কখনো কখনো যানজটের কারণে ৫/৬ বা ৮ ঘন্টাও লেগে যেতো গন্তব্যে পৌঁছতে। এতে করে যানবাহন মালিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হতো।
দেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড বলা হয়ে থাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। চার লেনের এ মহাসড়কের যানবাহনগুলো এত দিন দুই লেনের মেঘনা, গোমতী ও কাঁচপুর সেতুতে ওঠার সময় যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হতো। প্রত্যেকটি গাড়িকে গড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হতো। দেশে দীর্ঘ ছুটির (ঈদ-পূজা) আগে-পরে যানজট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করত। এতে প্রতিদিনই লাখ লাখ যাত্রীকে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হতো।
বন্দরনগরী চট্রগ্রাম থেকে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো যানজটে পড়ে দিনের পর দিন মহাসড়কে পড়ে থাকতে হতো। এতে নির্ধারিত সময়ে মানুষ যেমন গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হতো একইভাবে আমদানী-রপ্তানী পণ্য পরিবহনেও দুর্ভোগ পোহাতে হতো। বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরত্বপূর্ণ নবনির্মিত মেঘনা, গোমতী ও কাঁচপুর এ ৩টি সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্ধোধন করায় এবং পাশাপাশি পুরাতন ৩টি সেতু সংস্কার কাজ শেষে চালু করার ফলে এ মহাসড়কে আর যানজট নেই। ফলে আমদানী রপ্তানী পরিবহন ব্যয় কমে গেছে।
রাজধানীতে কর্মস্থলে আসা-যাওয়া মানুষও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। শফিউল আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান শফিউল আলম ছোটন বলেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক হয়ে আমাদের কোম্পানীর বিভিন্ন পণ্য ঢাকাসহ উত্তর-পশ্চিমাঅঞ্চলে প্রায় প্রতিদিনই পাঠাতে হয়। ঢাকা-চট্রগ্রাম মাহসড়কের চারলেনের ছয়টি সেতু চালু হত্তয়ার আমরা নিবিঘের্œ পণ্য পাঠাতে পারছি।