দক্ষিণখানে দুই শিশুসহ স্ত্রী হত্যা, স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর দক্ষিনখানে মা ও দুই সন্তানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত গৃহবধূ মুন্নী বেগমের (৩৭) ভাই বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় মামলাটি করেন। এতে একমাত্র আসামি করা হয়েছে মুন্নীর স্বামী রাকিব উদ্দীন ভূইয়াকে।

শনিবার রাতে সোহেল আহমেদ মামলাটি করেন। এর আগে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় মুন্নী বেগমসহ তার দুই সন্তানকে। রোববার দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিকদার মো. শামীম হোসেন ডেইলি বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মামলায় মুন্নীর স্বামী রাকিব উদ্দীনকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার পর থেকেই ‘নিখোঁজ’ কিংবা পলাতক আছেন তিনি। তাই সঙ্গত কারণেই তিনি সন্দেহের মধ্যেই পড়েন। আমরা তাকে খুঁজছি।

নিহত মুন্নী বেগমের ভাই সোহেল জানান, তার বোন জামাই রাকিব উদ্দীন ভূইয়া বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন লিমিটেডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী। তিনি সম্প্রতি গুলশান থেকে উত্তরায় বদলি হন। কয়েক মাস আগে তিনি অপহৃত হন। কিছুদিন পর আবারো ফিরে আসেন। তবে কারা, কি জন্য তাকে অপহরণ করেছিল, তা পরিষ্কার নয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল জানিয়েছেন, রাকিবের সন্ধানে অনুসন্ধান চলছে। তাকে পাওয়া গেলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হবে। ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার খোঁজ পাওয়া গেছে। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের কাজ চলছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রতিবেশী ও পরিবারের কাছ থেকে শুনেছি ৪/৫ মাস আগে তিনি অবহৃত হয়েছিলেন। তবে এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। তাই এ বিষয়ে কোনো ডকুমেন্ট নেই।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাকিবকে সর্বশেষ দেখা গেছে ১২ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে। তবে তার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ট্রিপল মার্ডারের ঘটনাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেশটিগেশন (পিবিআই), র‌্যাবসহ একাধিক সংস্থা তদন্ত করছে।

গত শনিবার রাজধানী দক্ষিণখানের প্রেমবাগান এলাকার ৮৩৮ নম্বরও বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে মুন্নী বেগম (৩৭), তার ছেলে ফরহাদ উদ্দীন (১২) ও মেয়ে লাইভা ভূইয়ার (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ তিনটির ময়নাতদন্ত করেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক (ফরেনসিক) ডা.এ কে এম মাইনুদ্দীন।

তিনি জানান, মুন্নী বেগমের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর দুই শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। মরদেহগুলো থেকে রক্ত ও ভিসেরা সংগ্রহ করে সেগুলো ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। মরদেহগুলোর উপরিভাগের বেশিরভাগ অংশই পচে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি।

আজকের বাজার/এমএইচ