দর হারালেও পাঁচ কোম্পানির নিয়ন্ত্রনেই ছিল ডিএসই’র লেনদেন

দেশের পুঁজিবাজারে লাগাতার সূচক ও দর পতনের পর গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনে কিছুটা স্বস্তির ছাপ রেখেছে।ডিএসইর লেনদেন চিত্রে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর কিছুটা ইঙ্গিতও ছিল।

লেনদেনের এই স্বস্তি ফেরাতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে নতুন তিন কোম্পানি। সক্রিয় ছিল নতুন তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড, এডভেন্ট ফার্মা ও কুইন সাউথ টেক্সটাইল ।

গত সপ্তাহে বাজারের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণকারী শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো, বিএসআরএম ও ইউনাইটেড পাওয়ার ছিল বড় মূলধনী কোম্পানি।দিন শেষে যদিও ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে চারটিরই দর হারিয়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর লেনদেনে গতি নিয়ন্ত্রণকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেড।

সপ্তাহ শেষে টাকার অঙ্কে কোম্পানিটি শেয়ার লেনদেন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৮ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ছয় দশমিক এক শতাংশ। আর বাজার মূলধন প্রায় ৪০৭ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহান্তে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৪ শতাংশেরও বেশি। সর্বশেষ বাজারদর দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকা ২০ পয়সা।

সপ্তাহজুড়ে দর বাড়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এরপরের অবস্থানে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন টাকার অঙ্কে প্রায় ৭৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের চার শতাংশ। আর সপ্তাহ শেষে ব্যাংকটির বাজার মূলধন প্রায় ছয় হাজার ৮৩০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহান্তে কোম্পানিটির শেয়ারদর সাত দশমিক ছয় শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ বাজারদর দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ৬০ পয়সা।

সপ্তাহ শেষে শেয়ারদর সাড়ে তিন শতাংশ কমলেও বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে এরপরের অবস্থানেই ছিল বড় পুঁজির আরেক কোম্পানি বিএসআরএম। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির প্রায় ৭৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৯০ শতাংশ। আর সপ্তাহ শেষে ব্যাংকটির বাজার মূলধন প্রায় দুই হাজার ৪২০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। লেনদেনে এগিয়ে থাকলেও সপ্তাহান্তে কোম্পানিটির শেয়ার দর সাড়ে তিন শতাংশ কমেছে। সর্বশেষ বাজার দর ছিল ১১২ টাকা ৮০ পয়সা।

ওই তিন কোম্পানি ছাড়া লেনদেনে এগিয়ে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে পরের অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো, ইউনাইটেড পাওয়ার, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, এডভেন্ট ফার্মা ও কুইন সাউথ টেক্সটাইল, গ্রামীণফোন ও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড। এর মধ্যে স্বল্প মূলধনী লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, নতুন তালিকাভুক্ত এডভেন্ট ফার্মা ও কুইন সাউথ টেক্সটাইল ও প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের শেয়ারদরও বেড়েছে। অন্যদিকে বড় পুঁজির কোম্পানি বিএসআরএম, বেক্সিমকো, ইউনাইটেড পাওয়ার ও গ্রামীণফোনের শেয়ারদর কমেছে।

সপ্তাহজুড়ে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ছিল বড় পুঁজির পাঁচটি কোম্পানির চারটি গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো, বিএসআরএম ও ইউনাইটেড পাওয়ারের শেয়ার বিক্রির চাপ লক্ষণীয় ছিল। এ চারটি কোম্পানির শেয়ারদর কমার কারণে সপ্তাহান্তে বাজার এগিয়ে যাবার ইঙ্গিত দিলেও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৪৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১০৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। অন্যদিকে সপ্তাহ শেষের ২৫টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। সপ্তাহের মোট লেনদেন এর আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ২১ শতাংশ বেড়েছে। তবে লেনদেন বাড়লেও ডিএসইর সার্বিক সূচক কিছুটা কমেছে।

জাকির/আজকের বাজার