দিল্লিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫, মসজিদে হামলা

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিরোধের জেরে ভয়াবহ সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ জনে পৌঁছেছে। ভয়াবহ ওই সহিংসতার মধ্যে দিল্লির অশোকনগরে দুর্বৃত্তরা একটি বড় মসজিদে হামলা চালিয়ে মসজিদের মিনারে গেরুয়া পতাকা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

দুর্বৃত্তরা এসময় আগুন ধরিয়ে দিলে মসজিদের ভেতরে থাকা জিনিষপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হামলাকারীরা আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ও দোকানেও আগুন ধরিয়ে দিলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ সম্পর্কে আজ বৃহস্পতিবার জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম রেডিও তেহরানকে বলেন, আমাদের দাবি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সক্রিয় হোক। মসজিদ যাতে অক্ষুণ্নভাবে সেখানে থাকে, মসজিদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে সম্পূর্ণভাবে মেরামত করে মুসলিমদের নিরাপদে সেখানে নামাজ পড়ার পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। এটা নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না। মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখানে আল্লাহর ইবাদত হবে। প্রকাশ্য দিবালোকে যার ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক যাতে গোটা ভারত ও বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।

গণমাধ্যমে প্রচারিত এক ভিডিও চিত্রে প্রকাশ, কয়েকজন যুবক প্রকাশ্য দিবালোকে মসজিদের সুউচ্চ মিনারে উঠে সেখানে থাকা মাইক নীচে ফেলে দেয়। এদের মধ্যে একজন সেখানে ‘গেরুয়া’ পতাকা টাঙিয়ে দেয়। আরেকজন সেখানে জাতীয় পতাকা টাঙায়। উড়তে থাকে কালো ধোঁয়া।

গত (মঙ্গলবার) ওই হামলার কথা প্রকাশ্যে আসলেও বিষয়টি অনেকেই ভুয়ো বলে অভিহিত করেন। কিন্তু গতকাল (বুধবার) সাংবাদিকেরা উত্তর-পূর্ব দিল্লির অশোক নগরে, পাঁচ নম্বর গলিতে গিয়ে দেখেন, বড় মসজিদের মাথায় এখনও উড়ছে গেরুয়া পতাকা। লেখা আছে, ‘জয় শ্রীরাম’! ভিডিও ক্লিপে যে ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল, সেই ধোঁয়া মসজিদে লাগানো আগুন থেকেই বেরোচ্ছিল বলে জানা গেছে। দুর্বৃত্তরা এসময় মসজিদে তাণ্ডব চালানোর পরে স্থানীয় মুসলিমদের কয়েকটি দোকান এবং কমপক্ষে তিনটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

স্থানীয় হিন্দুরা বলেন, এখানে মসজিদ অনেক বছর ধরে রয়েছে। যারা মসজিদের ক্ষতি করেছে তারা বাইরের লোক। জিতেন্দ্র কুমার নামে ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আমি মসজিদে হামলা চালানোর বিরোধিতা করেছিলাম। ওরা বাইরের থেকে এসেছিল। তারা ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগান দিচ্ছিল। ওদের কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছিলাম- এসব করলেও প্রতিবেশীদের ক্ষতিগ্রস্ত না করতে, তারা দীর্ঘকাল ধরে আমাদের সঙ্গে বাস করে আসছে। কিন্তু হামলাকারীরা তার কথায় কান দেয়নি বলে জিতেন্দ্র কুমার জানান।

আজকের বাজার/এমএইচ