দুদক কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া চেয়ারম্যানের

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ সব কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতের সভাপতিত্বে কমিশনের সমন্বয় সভা চলছিল। এতে আকস্মিক দুদক চেয়ারম্যান উপস্থিত হয়ে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং দুঃখিত। আপনারা কি আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন? আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই নির্ধারিত সময়ে অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। কিভাবে ত্রুটিপূর্ণ প্রতিবেদন কমিশনে উপস্থাপিত হয়? এতে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মনে রাখবেন দুদক একটি গণপ্রতিষ্ঠান।

এ সময় তিনি বলেন, জনগণের কাছে দুদকেরও জবাবদিহিতা রয়েছে। তাই আপনাদেরও জবাবদিহিতা করতে হবে। অনুসন্ধান ও তদন্তে টাইমলাইন না মানার জন্য রেকর্ডপত্র সময়মতো না পাওয়ার বিষয়টি আপনার বলে থাকেন। কী ভয়ঙ্কর কথা? কে রেকর্ডপত্র দেয় না? যে বা যারা অনুসন্ধান বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনাদের রেকর্ডপত্র ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কেন দুদক আইন, ২০০৪ এর ১৯(৩) ধারায় মামলা হচ্ছে না?

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে যারা দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্তে সংশ্লিষ্ট তথ্য সরবরাহ করছেন না, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করতে হবে। কেউ যেন ছাড় না পায়। আপনারা আইনি দায়িত্ব পালন করবেন। একটিও বেআইনি কাজ করতে পারবেন না। আইনি দায়িত্ব পালন না করে বসে থাকবেন, এটা কমিশন মেনে নেবে না। এভাবে বেআইনি যুক্তির মাধ্যমে অভিযোগের অনুসন্ধান বা তদন্তে টাইমলাইন না মানার সংস্কৃতি সহ্য করা হবে না।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ মনে করে, সর্বত্রই দুর্নীতি রয়েছে। তাই দুদকের প্রতি তাদের আকাশচুম্বী প্রত্যশা। তাদের চাহিদার তুলনায় কমিশনের জোগানতো নগন্য। এর দায় কে নেবে? আপনাদেরই নিতে হবে। আপনাদের পদোন্নতি, দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ সবাইতো দেয়া হচ্ছে। তারপরও আপনারা কেন নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন না। বছরের শুরুতেই সতর্ক করছি। গুণে গুণে হিসাব নেয়া হবে। কেউ ব্যর্থ হলে জবাবদিহি করতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।

ফাইনাল রিপোর্টের সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক মামলা দায়ের করার পর, সেই মামলায় তো ফাইনাল রিপোর্ট (মিথ্যা) হতে পারে না? এ জাতীয় ঘটনা, কীভাবে কমিশনে উপস্থাপিত হয়? তাহলে আপনারা কি দুদক আইনের ২৮ ধারা সম্পর্কে সম্যক ধারণাও রাখেন না? কেউ যদি মিথ্যা জেনে বা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত না হয়ে তথ্য দিয়ে কমিশনে মামলা দায়েরের সুপারিশ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৮ (গ) ধারায় মামলা মামলা হচ্ছে না কেন? আজ থেকে এ জাতীয় মিথ্যা মামলা দায়েরকারী তিনি যেই হোন না কেন, তার বিরুদ্ধেও আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান