দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, চাঁদপুরের ব্যবসায়ীদের

ঈদ সামনে রেখে দোকান খোলার অনুমতি পেলেও সিলেট, রাজশাহী, চাঁদপুরের ব্যবসায়ীরা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু ব্যবসায়ী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করার জন্য তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিলেট নগরীতে ব্যবসায়ী নেতা ও মালিকরা ঈদুল ফিতর পর্যন্ত শপিংমল ও মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুক্রবার সিলেট সিটি করপোরেশনের (এসসিসি) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বৈঠকে উপস্থিত সকলেই ঈদ পর্যন্ত দোকান বন্ধ রাখার বিষয়ে একমত হন। অন্য যেকোনো কিছুর তুলনায় জীবন মূল্যবান উল্লেখ করে সিলেট চেম্বার্স অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, ‘এটি সরকারের প্রতি একটি বড় বার্তা।’ চট্টগ্রাম শহরের ১১ জন দোকান মালিক আগামী ৩১ মে পর্যন্ত নগরীতে তাদের ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা স্থানীয় মিমি সুপার মার্কেটে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নেন।

৩১ মে পর্যন্ত যেসব মার্কেট বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- চট্টগ্রাম শপিং কমপ্লেক্স, ফিনলে স্কয়ার শপ, সেন্ট্রাল প্লাজা, আমিন সেন্টার, আফমি প্লাজা, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সানমার ওশান সিটি, সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেট, কল্লোল সুপার মার্কেট এবং মিমি সুপার মার্কেট। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শনিবার সন্ধ্যায় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সকল মার্কেট এবং শপিংমল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাসিক মেয়র বলেন, ‘জনস্বার্থ বিবেচনায় সকল ব্যবসায়ীরা রবিবার সকাল থেকে মার্কেট এবং শপিংমল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ চাঁদপুরে, জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান শনিবার রাতে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা করেন যে, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ১০ মে থেকে শপিংমল, বাজার, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শনিবার রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া এক পোস্টে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রশাসনের নির্দেশাবলী লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) নগরবাসীকে সরকার ঘোষিত সময়সূচী ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে স্ব স্ব এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত মার্কেট থেকে তাদের ঈদের কেনাকাটা শেষ করার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া প্রতিটি শপিংমলের প্রবেশপথে স্বয়ংক্রিয় জীবাণুনাশক টানেল বা চেম্বার স্থাপন এবং প্রতিটি দোকানে পৃথক তাপমাত্রা পরিমাপ ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। এর আগে গত মঙ্গলবার, সাধারণ ছুটির দিনগুলোতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা বজায় রেখে ব্যবসায়ীদের রবিবার (১০ মে) থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টার জন্য দোকান ও শপিংমল খোলা রাখার অনুমতি দেয় সরকার। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সরকার আগামী ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে। এছাড়া ৩০ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, পোশাক কারখানা, শপিংমল ও দোকান পুনরায় চালু করা হলে করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। ঈদের আগে দোকান ও শপিংমলগুলো পুনরায় চালু হলে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও। এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭৭০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত এবং ২১৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান