দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ‘ডাবল রেল লাইন স্থাপন’ প্রকল্প

বিশ্বব্যাপী এখন বড় আতঙ্ক করোনাভাইরাস। চীনের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৪৫টি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। তবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ডাবল রেল লাইন স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। নারায়ণগঞ্জে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেও এই প্রকল্পে এর প্রভাব পড়েনি।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বপ্নের প্রকল্প হচ্ছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল রুটে ডাবল রেল লাইন। এই দাবিতে নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনেকবার সভা সমাবেশসহ রাজপথে নামতে হয়েছিলো। অনেক আন্দোলনের পর ২০১৫ সালে এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি। এরপর ২০১৭ সালের ২০ জুন চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন লিমিটেডের সাথে চুক্তি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

করোনাভাইরাসের কারনে ডাবল রেল লাইনের কাজে এখনও কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

গত ৯ মার্চ সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ডাবল রেললাইন প্রকল্পের কাজ বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন থেকে কমলাপুর পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশন ছাড়া মোট ৬টি স্টেশনে প্লাটফর্ম ও রেল ভবন নির্মাণ কাজ বেশ দ্রুত গতিতে চলছে। শ্যামপুর ও পাগলা স্টেশনের প্লাটফর্ম ও রেল ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। ফতুল্লা, গেন্ডারিয়া ও চাষাঢ়া নির্মাণাধীন রয়েছে। এছাড়া নির্মাণাধীন রয়েছে ফুটওভার ব্রিজও।

এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেল স্টেশনের স্টেশনমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ডাবল রেললাইন প্রকল্পে করোনার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। কারণ আগে যে গতিতে কাজ হতো এখনও সেই গতিতেই কাজ হচ্ছে। অন্যান্য স্টেশনে রেল ভবন ও প্লাটফর্ম নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। এই স্টেশনে প্লাটফর্মের কাজ চলছে। কিন্তু রেল ভবনের জায়গায় বিআইডব্লিউটিএর একটি ভবন আছে। যে কারণে দেরি হচ্ছে। কিন্তু তারা নিয়মিত মিটিং করছে হয়তো অল্পদিনের মধ্যেই ভবনটি সরিয়ে প্লাটফর্মের কাজ শুরু হবে।’

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক প্রকল্পের সাথে জড়িত বাংলাদেশ রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ডাবল রেল লাইন প্রকল্পে চীনা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। কিন্তু অধিকাংশ শ্রমিক বাংলাদেশি। এছাড়া বাংলাদেশে মাত্র ভাইরাসটি ধরা পড়েছে। যে কারণে এখনও এই প্রকল্পে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি। তাই কাজ দ্রুতগতিতেই এগিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রকল্পটির আওতায় ১২ দশমিক ১০ কিলোমিটার মেইন লাইন ও ৫ দশমিক ১০ কিলোমিটার লুপ লাইন নির্মাণ করা হবে। রেলপথটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। রেললাইন ছাড়াও রেলপথে ১১টি সেতু ও কালভার্ট, দুটি ওয়াশপিট, একটি অফিস কাম স্টেশন বিল্ডিং, ৬টি স্টেশন ভবন ও প্লাটফর্ম শেড, চারটি ফুট ওভারব্রিজ, ১৮ হাজার ৯৫০ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল, ১২টি লেভেল ক্রসিং গেট, ৩ হাজার ৩শ’ মিটার ফেন্সিং, ৯ হাজার ৫০৭ বর্গমিটার সংযোগ সড়ক এবং ৩ হাজার মিটার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/শারমিন আক্তার