নাটোরে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা

জেলার সিংড়া উপজেলা পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপৎ সীমার ১০৫ সেন্টিমিটার উপরে এবং নলডাঙ্গা ষ্টেশন পয়েন্টে বারনই নদীর পানি বিপৎ সীমার ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উদ্ভূত বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আজ বুধবার বেলা একটায় জরুরী সভা করেছে জেলা দুূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ সভা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

সভায় জানানো হয়, চলনবিল ও হালতি বিল অধ্যুষিত সিংড়া, গুরুদাসপুর ও নলডাঙ্গা উপজেলায় দুই হাজার ৯৬৪ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৪ জন কৃষক। ইতোমধ্যে সিংড়া উপজেলায় ২২টি এবং নলডাঙ্গা উপজেলায় ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মোট ২৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে এক হাজার ৭০০ জন শিশু, মহিলা ও পুরুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু রায়হান জানান, গত ২০ বছরের মধ্যে আত্রাই নদীর পানি বর্তমানে বিপৎ সীমার সবচে’ উপরে অবস্থান করছে। আগামী দুই থেকে তিন দিন পরে থেকে অবস্থার উন্নতি হতে পারে।

বন্যা দুূর্গত মানুষের মাঝে ইতোমধ্যে ত্রাণ ও দুূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ২৭ টন চাল এবং নগদ এক লাখ টাকা বিতরণ করেছে। ২৭০ টন চাল এবং আট লাখ টাকা বর্তমানে মজুদ আছে বলে জানান জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ সালাহ উদ্দিন-আল-ওয়াদুদ।
সভায় আত্রাই নদীতে অবৈধভাবে স্থাপিত সৌতি জাল পানির প্রবাহ নেমে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে জানান এনএসআই’র উপ পরিচালক ইকবাল হোসেন।

ন্যার পানি নেমে গেলে সরকার কৃষি পুনর্বাসন কাজ শুরু করবে বলে সভাকে অবহিত করেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। ইতোমধ্যে পানির স্বাভাবিক প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সৌতি জাল অপসারণে প্রশাসনিক অভিযান শুরু হয়েছে এবং তা আরো জোরদার করা হবে।

 

বন্যা দুূর্গত মানুষের চিকিৎসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে ১৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রবাহ, খাদ্য গুদাম এবং চলাচলের রাস্তা ও মহাসড়ক বন্যার ক্ষয়ক্ষতির আওতামুক্ত রাখতে প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত আছে। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহ সমন্বিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে সভার সভাপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।