নির্বাচনে অযোগ্য করার নীলনকশা করছে সরকার

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরানো এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা প্রণয়ন করছে ক্ষমতাসীনরা।

২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৫-এ হাজির হয়ে খালেদা জিয়া নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, মামলা চলাকাল কোনো কোনো মন্ত্রী প্রকাশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন যে আমাকে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হবে। শাসক দলের কোনো কোনো নেতা আমাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এসব বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল।

দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতে পৌঁছান। আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর তার আইনজীবীরা স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। পরে এই আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। শেষে বিচারক স্থায়ী জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে মামলার আগামী শুনানির দিন ৯ নভেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন।

এছাড়া খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তা পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে করা আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম মুলতবি রাখার আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে দিয়েছেন।

গত ১৯ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। ওই দিন বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান খালেদা জিয়া। পরে আদালত জামিন আবেদনের শুনানি শেষে এক লাখ টাকা মুচলেকায় তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত জানান, অনুমতি নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে পারবেন খালেদা জিয়া।

ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। তার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় পরবর্তী বক্তব্যের জন্য ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। ওই দিনও তার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় আজকের দিন ধার্য করা হয়।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন বিশেষ জজ আদালত।

উল্লেখ, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২ নভেম্বর ২০১৭