নেপালের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় চায় বাংলাদেশ

দুই ম্যাচের মুজিব বর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারী নেপালকে হারিয়েছে স্বাগতিক বংিলাদেশ। ২-০ গোলের উড়ন্ত সুচনার পর এবার দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় চায় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি আগামীকাল বিকেল ৫টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে (বিএনএস) শুরু হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন। সরাসরি ধারাভাষ্য সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।
ইতোমধ্যে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার কারণে আগামীকাল সফরকারী নেপালের সঙ্গে ড্র করতে পারলেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। অপরদিকে প্রথম ম্যাচে হারের কারণে এটি হবে সিরিজ বাঁচানোর জন্য নেপালীদের মরা-বাঁচার লড়াই।
সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সাফল্য পেয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। এর পর গোটা এক যুগের বেশী সময় পার হলেও আর কোন শিরোপার দেখা পায়নি তারা। সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে যেমন আর কোন শিরোপা পায়নি তেমনি জয় করতে পারেনি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের শিরোপাও।
সর্বশেষ হোম ভেন্যুতে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে এই নেপালীদের কাছেই শিরোপা খুইয়েছে বাংলাদেশ। একই বছর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে বুরুন্ডির কাছে ৩-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নেয় লাল সবুজের দল।
এটি ঠিক যে সাফ টুর্নামেন্ট কিংবা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ অনেক বেশী মর্যাদার। তবে ফিফা প্রীতি ম্যাচের এই সিরিজকেও খুব বেশী খাট করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ দুই ম্যাচের এই সিরিজকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। যে কারণে এই সিরিজের নামকরণ হয়েছে ‘মুজিব বর্ষ’ ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ সিরিজ। ফলে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক মুহুর্তের সাক্ষী হবার সুযোগ পাচ্ছে জামাল ভুঁইয়ার দল।
প্রথম ম্যাচের প্রত্যাশিত জয়টি বাংলাদেশ দলের মানষিক দৃঢ়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। ওই জয়টি পরের ম্যাচে আরো ভাল ফুটবল খেলার জন্য দলকে অনুপ্রানীত করবে। শুধু তাই নয়, এই জয় শক্তিশালী কাতারের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আসন্ন ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে লড়াই করার মানষিকতা বাড়িয়ে দিবে।
তবে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের দু:সংবাদ হয়ে এসেছে প্রধান কোচ জেমি ডে’র কোভিড-১৯ সংক্রমন। শুক্রবার নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের পর দলের সকল খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফের করোনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফলে কেবল জেমি ডে’র দেহেই করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। জেমি ডে রাজধানীর একটি হোটেলে আইসোলেশনে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে করোনা উপসর্গ না থাকায় তাকে ফের পরীক্ষা করানো হয়েছে। ফল নেগেটিভ হলে কাল হয়তো দলের সঙ্গে দেখা যাবে ইংলিশ কোচকে।
অবশ্য কোচের অসুস্থতার জের ধরে নিজেদের প্রস্তুতিতে কোন রকম ঘাটতি রাখতে চাননা স্বাগতিক ফুটবলাররা। অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া মনে করেন কোচের অনুপস্থিতির প্রভাব দলীয় পারফর্মেন্সে পড়বে না। কারণ মানষিক ভাবে তারা খুবই শক্তিশালী এবং সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস জেমির সঙ্গে যোগাযোগ করেই অনুশীলনে জামাল বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।
প্রথম ম্যাচের ১০ মিনিটে নাবিব নেওয়াজ জীবনের গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর ৮০ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় মাহবুবুর রহমান সুফিল গোল করলে ২-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশ দলের।
দ্বিতীয় ম্যাচেও একই পারফর্মেন্স ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। সেই সঙ্গে রয়েছে স্বাগতিক দর্শকদের অকুন্ঠ সমর্থন। প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচেও দলকে সমর্থন জানাতে প্রস্তুত স্বাগতিক দর্শকরা।
অপরদিকে হিমালয় কন্যাদের উপর ভর করেছে কোভিড-১৯ এর সংক্রমন। প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচেও তারা বঞ্চিত হবে বেশ কয়েকজন শীর্ষ তারকার সেবা থেকে। নিয়মিত একাদশের চারজন সহ তাদের মোট ৯ জন ফুটবলার কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত। তাদের অনুপস্থিতির কারণে দ্বিতীয় ম্যাচেও স্বাগতিকদের আধিপত্য বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্ভাব্য স্কোয়াড:
বাংলাদেশ: বিশ^নাথ ঘোষ, তপু বর্মন, রিয়াদুল হাসান, জামাল ভুঁইয়া, নাবিব নেওয়াজ জীবন, সুমন রেজা, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মানিক মোল্লা, স্বাদ উদ্দিন ও আনিসুর রহমান
নেপাল: কিনার চেমজং, সৌমেন আরিয়াল, অনন্ত তামাং, অজিত বান্দারি, বিকাশ খাওয়াস, বিক্রম লামা , তেজ তামাং, অঞ্জন বিসতা, সুজল শ্রেষ্টা, রাবি পাসভান ও নাওয়াং শ্রেষ্ঠা।