পরিবহন ধর্মঘটে শ্রমিকরা, চরম বিপাকে নগরবাসী

নতুন সড়ক আইনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকরা। তবে মালিক সমিতি ও শ্রমিক নেতারা বলছেন তাদের থেকে ধর্মঘট করার কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

বুধবার সকাল থেকেই পুরো রাজধানীতে গনপরিবহনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এছাড়া দূরপাল্লার কোন বাসও পরিবহণ শ্রমিকরা সকাল থেকেই রাস্তায় নামায়নি। যার ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী।

সকাল থেকেই মিরপুর-মতিঝিল, মোহাম্মদপুর-সায়েদাবাদ, উত্তরা-মতিঝিল রুটে চলাচলকারী নিয়মিত বাসগুলো সড়কে প্রায় দেখাই যায়নি। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রোকেয়া সরণি, প্রগতি সরণি, এয়ারপোর্ট রোড, কাজী নজরুল ইসলাম অ‌্যাভিনিউয়ে কিছু গাড়ি চললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ছিল ফাঁকা। নামমাত্র বাস চলাচল করছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

গাজীপুর থেকে মিরপুরে অফিসে আসেন ইসমাইল নামে এক চাকরিজীবী। তিনি বলেন, ‘সকালে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর একটা বাস পাই। যাতে করে বেড়িবাঁধ যাই। সেখান থেকে ২০০ টাকা দিয়ে অন‌্য গাড়িতে করে মিরপুর মাজার রোড অফিসে পৌঁছায়। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।’

আবদুল্লাহ পুর থেকে মিরপুর ১০ নম্বরে আসেন সাইফ নামে একজন। তিনি জানান, আবদুল্লাহপুর থেকে সরাসরি কোনো বাস আসেনি। কয়েক দফা গাড়ি পরিবর্তন করে এখানে আসতে হয়েছে।

এদিকে সকাল থেকে রাজধানীর বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি বলে জানা গেছে। যার ফলে চরম বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা।

উল্লেখ্য, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের দু’টি ধারা সংশোধনের দাবিতে শ্রমিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন। দাবি দুইটি হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো চালক দোষী হলেও দণ্ড না হওয়া পর্যন্ত জামিনযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং জরিমানার হার কমাতে হবে।

পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমাদের থেকে ধর্মঘটে যাওয়ার মতো কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। সকালে কিছু গাড়ি বের করা হয়েছিলো বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য কিন্তু আমি খবর পেয়েছি ট্রাক শ্রমিকদের জন্য গাড়ি চালানো যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘গাড়ি বন্ধ রাখতে মালিকদের কোনো নির্দেশনা নেই। রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে আমাদের বাসের টিকিট কাউন্টার খোলা আছে। টিকিট বুকিংও হচ্ছে। কিন্তু জেলা থেকে শ্রমিকরা আর গাড়ি নিয়ে ফিরতে দিচ্ছে না, গাড়ি ভাঙচুর করছে। শ্রমিকরা এই কাজটা ঠিক করছে না। আলোচনা না করেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক নয়।’

আজকের বাজার/এমএইচ