পাটের সোনালী দিন ফেরাবে ‘আঁশকল’

ধান, ভুট্টা ও গম মাড়াইয়ের জন্য দীর্ঘ দিন ধরে অটোমেটিক মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু পাটের আঁশ ছাড়ানোর জন্য ওই ধরনের কোনো মেশিন ছিল না। পাট অনেক দিন ‘জাগ’ দিয়ে এর ছাল ছাড়াতেন কৃষকরা। এতে দীর্ঘ সময় ও বেশি শ্রম দিতে হতো। এই সমস্যার সমাধানে সেমি-অটোমেটিক মেশিন ‘আঁশকল’ এর উদ্ভাবন করা হয়েছে। পাটের সোনালী দিন ফেরাবে আঁশকল।

সেমি-অটোমেটিক মেশিন ‘আঁশকল’ এর ব্যবহার সম্পর্কে পাট চাষীদের জানাতে আয়োজিত আলোচনা সভায় রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন মিয়া এসব কথা বলেন। এর আগে ‘পাটযাত্রা: সোনালী আঁশ ও রূপালী কাঠির নতুন দিন’ শীর্ষক শ্লোগানে রংপুর থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত রোড শো করা হয়। এই কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাট চাষীদের পাশাপাশি কৃষি বিশেষজ্ঞরাও অংশ নিয়েছেন।

রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আঁশকল- এর ব্যবহার কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনরিহাট ও গাইবান্ধা জেলার ৬০ জন উদ্যোক্তা আঁশকল দিয়ে পাটের ছাল ছড়ানো শুরু করেছেন। এর ব্যবহার বাড়লে চাষী এবং পাটের ছাল ছাড়ানোর কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের কষ্ট কমবে। সহজেই মেশিনে ছাল ছাড়িয়ে শুধু ছাল জাগ দিতে পারবেন। ফলে খরচও কমে আসবে। পাট কাঠিও নষ্ট হবে না।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপ-পরিচালক স.ম. আশরাফ আলী বলেন, পাটের মান ঠিক না থাকলে কৃষকরা সঠিক মূল্য পান না। আঁশকল পাটের মান ঠিক রাখবে; এতে ফ্যাশকা জাতীয় অপচয় হবে না।

প্র্যাক্টিকেল অ্যাকশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, আমরা অল্প কিছু আঁশকল দিয়ে পাটযাত্রা ক্যাম্পেইনে আঁশকলের সঙ্গে কৃষকদের পরিচয় করিয়ে দিলাম। এবার তারা নিজেরাই এর ব্যবহার করতে পারবেন।

তিনি জানান, শুরুতে আঁশকলের যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও স্থানীয়ভাবে কিছু উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা দক্ষ কর্মীতে পরিণত হলে- দেশেই এই আঁশকল বানানো সম্ভব। এতে পৃথক উদ্যোক্তা শ্রেণি গড়ে তোলা সম্ভব।

হাসিন জাহান বলেন, প্রথাগত পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়াতে যে খরচ হয়- তার মাত্র ৩৩ শতাংশ খরচ হবে আঁশকলে। আঁশের গুণগত মানও ভালো থাকে।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ০৮ আগস্ট ২০১৬