‘পুঁজিবাজারের স্বার্থে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জকেই স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার করা উচিত’

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পুঁজিবাজারের স্বার্থে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকে ডিএসই’র স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার বা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে নেওয়া উচিত। কারণ তারা দরের দিক থেকে যেমন এগিয়ে আছে, তেমনি তারা প্রযুক্তিগত সহায়তাও দিবে। ধীরে ধীরে দেশের পুঁজিবাজার একটা আস্থার যায়গায় যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ে যদি সিদ্বান্ত নিতে ভুল করা হয় তবে আমাদের পুঁজিবাজার অনেক পিছিয়ে পড়বে। বাজারে একটা আস্থার সংকট তৈরি হবে ।

এএনএফ ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানী লিঃ এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক শামসুল হুদা পুঁজিবাজারের আলোচিত বিষয় নিয়ে সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকারে আজকের বাজারকে এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের বাজার প্রতিবেদক এস এম জাকির হোসাইন।

২০১৩ সালের ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে ঢাকা স্টক এক্সেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বাধ্যবাধকতা আছে। এ সময়সীমা শেষ হবে আগামী ডিসেম্বরে । ঢাকা স্টক এক্সেঞ্জের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার নিয়ে আমাদের মাঝে একটা ধুম্রজাল সৃস্টি হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়টা খুবই দুঃখ জনক ।

এটা আমাদের পুঁজিবাজারের জন্য একটা সতর্ক সঙ্কেত যে আমাদের মার্কেট ধীরে ধীরে ভালোর দিকে যাচ্ছে । কিন্তু এই ধারাবাহিকতা নষ্ট করার জন্য আমাদের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারত। কারল তারা ওপেন টেন্ডারে অযোগ্য হয়ে এখন রাজনৈতিকভাবে আবার অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

যেখানে চায়না যোগ্যতা অর্জন করেছে । আমাদেরকে ফ্রি টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিবে এবং তারা বিজনেস করার জন্য বিনিয়োগ করবে। স্ট্র্যাটেজিক বা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদিত দেশি বা বিদেশি কোনো স্টক এক্সচেঞ্জ কিংবা বিনিয়োগ ব্যবস্থাপক কোম্পানি অথবা বিনিয়োগ ব্যাংক বা কোনো খ্যাতনামা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। উন্নততর প্রযুক্তিগত সুবিধা, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসা উন্নয়নে পরামর্শক সেবা পাওয়াই হবে কৌশলগত বিনিয়োগকারী নেওয়ার প্রধান লক্ষ্য।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ’র (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ার জন্য অন্যদের তুলনায় সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ এগিয়ে রয়েছে। এ কনসোর্টিয়ামটির কাছে ২২ টাকা দরে প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করতে পারবো একই সাথে এ কনসোর্টিয়ামটি ৩৭ মিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেবে আমাদেরকে । ফলে আমাদের দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিক একটা মানে পৌঁছাবে। যার কারনে আমাদের বন্ড মার্কেটে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। ফরেন কারেন্সি আসলে মার্কেট বড় হবে।

অন্যদিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, নাসডাক এবং ফ্রন্টিয়ার মিলে গঠিত কনসোর্টিয়াম ১৫ টাকা দরে ২৫ দশমিক ০১ শতাংশ শেয়ার নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। যেখানে সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু খুবই দুঃখ জনক ব্যাপার আমরা এখন শুনছি নাসডাক এবং ফ্রন্টিয়ার কনসোর্টিয়াম ওপেন টেন্ডারে হেরে কুটনেতিক ততপরতা চালাচ্ছে। যেটা আসলে আমাদের মার্কেটের জন্য মোটেও শুভ লক্ষন নয়।

তাই সময় নষ্ট না করে দ্রত সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ কে স্ট্রাটেজিক পার্টনার হিসেবে অনুমোদন দেওয়া উচিত। সরকারের ঘোষিত ভিশন ২০২০ বাস্তবায়ন করতে হলেও আমাদের পুঁজিবাজারকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নয়ন করতে হবে। আর চীন যেহেতু প্রযুক্তির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে তাই তারা আমাদের স্ট্রাটেজিক পার্টনার হলে আমরা অনেক এগিয়ে যাবো যা অন্যদের দিয়ে সম্ভব নয়।

তবে যে প্রতিষ্ঠানগুলো স্ট্রাটেজিক পার্টনার হিসেবে নিলে বাজার উপকৃত হবে-নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তাদেরকেই অনুমোদন দেওয়া উচিত বলে মনে করি ।

আজকের বাজার : জাকির/আরএম/১৭ ফেব্রুয়ারি