প্রতিকূল অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার পরিস্থিতির মোকাবেলায় ওআইসির পরিকল্পনা গ্রহণের আহবান প্রধানমন্ত্রীর

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিকূল অর্থনৈতিক, প্রতিবেশ ও নিরাপত্তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো লক্ষে ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি রোহিঙ্গাদের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা রুজুর বিষয়েও সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক, প্রতিবেশ এবং নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী এই বিশ্বে ওআইসিকে এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ পবিত্র মক্কা নগরীতে ১৪ তম ওআইসি সম্মেলনে এশীয় গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন। সম্মেলনের এবারের শিরোনাম ‘মক্কা আল মোকাররমা শীর্ষসম্মেলন: ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে’।

তিনি বলেন, ওআইসি’র নিজস্ব সমস্যাগুলো মোকাবেলার সক্ষমতা থাকা উচিত কেননা এটির বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ কৌশলগত সম্পদ এবং এর সিংহভাগ তরুণ-যুবক রয়েছে ।
শেখ হাসিনা এ সময় আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সম্মেলনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমেই জবাবদিহিতা এবং ন্যায় বিচারের প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের আইনগত অধিকার নিশ্চিতের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পথ তৈরী হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াকে এতদূর এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে আবেদন জানাচ্ছি এই মামলা রুজুর বিষয়ে স্বেচ্ছা তহবিল সংগ্রহ এবং কারিগরি সহযোগিতার জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্বেও বাংলাদেশ মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ বোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় প্রদান করেছে।
‘কিন্তু তাঁদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এখনো অনিশ্চিত-কেননা উত্তর রাখাইন রাজ্যে এসব রোহিঙ্গাদের ফেরার জন্য যে ধরনের অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন তা সৃষ্টিতে মিয়ানমার তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ধারবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেভাবে বাংলাদেশ করেছে, আসুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সে ধরনেরই একটি জিরো টলারোন্স নীতি গ্রহণ করি, সন্ত্রাসী বা সন্ত্রাসীদের দলকে যেকোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং উগ্রপন্থা বাস্তবায়নে বাধা দেই এবং জোটবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাই।’
এই প্রসংগে তিনি সন্ত্রাস বন্ধে রিয়াদ সম্মেলনে ঘোষিত মুসলিম বিশ্বের জন্য প্রদত্ত তাঁর ৪ দফা নীতির কথা স্মরণ করেন।
যার মধ্যে রয়েছে-অস্ত্রের জোগান বন্ধ করা, সন্ত্রাসের জন্য অর্থায়ন বন্ধ করা, মুসলিম উন্মাহর মধ্যকার বিভাজন দূর করা এবং সংলাপের মাধ্যমে যে কোন প্রকার দ্বন্দের শান্তিপূর্ণ সমাধান।
২১শ শতকের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য ওআইসির উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই আশা জাগানিয়া যে, নিজেকে ২১ শতকের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ওআইসি উন্নয়ন এবং সংস্কারের অতি প্রয়োজনীয় পথ গ্রহণ করেছে ।
তিনি একইসঙ্গে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ইসলামের মূল দর্শনকে মূল্য দেওয়াসহ সংগঠন, সমতা এবং ন্যায় বিচার সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (সা:) নির্দেশিত পথ অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন।