প্রথম টি-২০তে জয় হাতছাড়া করলো অস্ট্রেলিয়া

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-২০তে জয় হাতছাড়া করলো সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ১৬৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ১৪ ওভারে ১ উইকেটে ১২৪ রান সংগ্রহ করা অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ হাতের নাগালে নিয়ে আসে। শেষ ৬ ওভারে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৯ রান প্রয়োজন ছিলো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু পরের ৬ ওভারে আরও ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৬ রান করতে পারে অসিরা। ফলে ২ রানের ব্যবধানে দারুন এক জয়ের স্বাদ পায় ইংল্যান্ড। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইয়োইন মরগানের দল।
গেল মার্চে করোনাভাইরাসের কারনে ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাবার পর গতকালই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া। সাউদাম্পটনে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় অসিরা। ব্যাট হাতে ইংল্যান্ডকে ভালো শুরু এনে দেন ওপেনার উইকেটরক্ষক জশ বাটলার। ৪ ওভারে দল পায় ৪৩ রান। এরমধ্যে মাত্র ৮ রান অবদান রেখে অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্সের বলে আউট হন আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টো।
সতীর্থকে হারিয়েও রান তোলার গতি ধরে রেখেছিলেন বাটলার। তবে অষ্টম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার অ্যাস্টন আগারের বলে বিদায় ঘটে তার। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ বলে ৪৪ রান করেন বাটলার।
বাটলারের বিদায়ের পর শক্ত হাতে ইংল্যান্ডের হাল ধরেন ডেভিড মালান। কিন্তু মিডল-অর্ডারে মালানকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। তাই এক প্রান্ত আগলে রানের চাকা দ্রুতই ঘুড়িয়েছেন তিনি। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে আউট হবার আগে টি-২০ ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন তিনি। ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৩ বলে ৬৬ রান করে অস্ট্রেলিয়ার সফল বোলার কেন রিচার্ডসনের বলে আউট হন মালান আউট হন মালান। । তার ব্যাটিং নৈপুন্যে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬২ রান করে ইংল্যান্ড। রিচার্ডসন ৩ ওভারে ১৩ রানে, ম্যাক্সওয়েল ৩ ওভারে ১৪ রানে ২টি করে উইকেট নেন। আগারের শিকারও ছিলো ২টি।
১৬৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে উড়ন্ত সূচনা পায় অস্ট্রেলিয়া। দলের দুই ওপেনার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার ১১ ওভারে ৯৮ রান যোগ করে জয়ের পথ তৈরি করে ফেলেন। ৩২ বলে ৪৬ রান করা ফিঞ্চকে শিকার করে ইংল্যান্ডকে প্রথম উইকেট শিকারের সাফল্য এনে দেন পেসার জোফরা আর্চার। ফিঞ্চের ইনিংসে ৭টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। এই ইনিংসের মাধ্যমে বিশ্বের দশম ও অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-২০তে ২হাজার রান পূর্ণ করেন ফিঞ্চ।
এরপর ওয়ার্নারের সাথে জুটি বাঁধেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ছিলেন তিনি। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় অস্ট্রেলিয়ার জয়ের পথ আরও সহজ করেন স্মিথ।
১৪ ওভারে ১ উইকেটে ১২৪ রান করে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ৬ ওভারে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৯ রান প্রয়োজন ছিলো তাদের। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্মিথের আউট, ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফেরার পথ দেখায়। ১১ বলে ১৮ রান করা স্মিথকে শিকার করেন ইংল্যান্ডের স্পিনার আদিল রশিদ।
দলীয় ১২৪ রানে স্মিথের আউটের পর ১৩৩ রানের মধ্যে আরও ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এসময় ওয়ার্নার ৪৭ বলে ৪টি চারে ৫৮, ম্যাক্সওয়েল-অ্যালেক্স ক্যারি ১ রান করে ফিরেন। আর্চারের বলে বোল্ড হবার আগে ওয়ার্নার স্বাদ নেন টি-২০ ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফ-সেঞ্চুরির।
১৩৩ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ্যালেক্স ক্যারি যখন আউট হন, তখন অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিলো ২১ বলে ৩০ রান। কিন্তু শেষ দিকে, ইংল্যান্ডের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংএ ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬০ রান পর্যন্ত যেতে পারে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের শেষ ওভার পর্যন্ত খেলে ১৮ বলে ২৩ রান করেও অস্ট্রেলিয়ার হার এড়াতে পারেননি মার্কাস স্টয়নিস।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রানে, স্ট্রাইকে ছিলেন স্টয়নিস। বোলার ছিলেন পেসার টম কারান। একটি ছক্কাসহ ১২ রান নিতে সক্ষ হন স্টয়নিস।
ইংল্যান্ডের আর্চার-রশিদ ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার মালান।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (টস-অস্ট্রেলিয়া) :
ইংল্যান্ড : ১৬২/৭, ২০ ওভার (মালান ৬৬, বাটলার ৪৪, রিচার্ডসন ২/১৩)।
অস্ট্রেলিয়া : ১৬০/৬, ২০ ওভার (ওয়ার্নার ৫৮, ফিঞ্চ ৪৬, রশিদ ২/২৯)।
ফল : ইংল্যান্ড ২ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ডেভিড মালান (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড।