প্রযুক্তি বিভাগ হবে ভবিষ্যত এনবিআরের হ্যাচারি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ভবিষ্যতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের হ্যাচারি হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্মাণাধীন রাজস্ব ভবন প্রাঙ্গণে এনবিআর ‘জাতীয় রাজস্ব আহরণে তথ্য প্রযুক্তি’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, হ্যাচারিতে যেভাবে পোনা ফোটানো, মাছকে বড় করানো, তারপর বাজারে নিয়ে আসা হয় ঠিক সেভাবেই আইসিটি বিভাগ রাজস্ব আহরণের হ্যাচারি হিসেবে কাজ করছে। এনবিআর আইসিটি বিভাগ থেকে এখন কোনো ট্যাক্স পাচ্ছে না। আমরা সব সময় এনবিআরের কাছে যাই কর, শুল্ক, ভ্যাট কমানোর জন্য। এনবিআরকে আশ্বস্ত করতে চাই, এখন এনবিআর আইসিটি বিভাগে কর ছাড় দিয়ে এনবিআর যে বিনিয়োগ করছে আজ থেকে ৫ বা ১০ বছর পর শতগুণ বেশি রাজস্ব দেওয়া হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ডিজিটাল ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড প্রদান করায় এনবিআরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ কার্ড দেওয়ার মাধ্যমে এনবিআর আমাদের চমকে দিয়েছে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের এ কার্ড প্রদান প্রমাণ করে দেশ ডিজিটাল হওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু এগিয়ে গেছে। আয়কর মেলা বা এনবিআর ডিজিটাল হওয়ার দৃষ্টান্ত আজকের এ ডিজিটাল কার্ড। প্রযুক্তি কীভাবে দেশকে দুর্নীতি, হয়রানিমুক্ত হচ্ছে, মানুষ অনেক বেশি সেবা পাচ্ছে তা বোঝা যায় আজকের এ ডিজিটাল কার্ড প্রদানের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, এনবিআর গত সাড়ে আট বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কী পরিমাণ করসেবা দিচ্ছে তার প্রমাণ আজকের মেলায় জনগণের উপস্থিতি, করসেবা গ্রহণ। দেশের ডিজিটাল প্রযুক্তিতে যে কয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত হয়েছে- তার মধ্যে সবচেয়ে সফল প্রতিষ্ঠান এনবিআর।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের উদাহরণ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে কিছু সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের ফলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ বেড়েছে। একই সঙ্গে দুর্নীতিও কমেছে। এনবিআর গত অর্থবছর ১ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে। চলতি অর্থবছর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। এ রাজস্ব আহরণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দ্রুত একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, আজকে কেন বলা হচ্ছে রাজস্ব উন্নয়নের অক্সিজেন। কারণ এ রাজস্ব দ্বারা বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমরা কেউ রাজস্ব না দিলে এ উন্নয়ন কীভাবে হবে। আমরা সরকারকে রাজস্ব প্রদান করছি না নিজেদের উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রচুর পরিমাণ তরুণ কর প্রদান করছে দেখে ভালো লাগছে। তরুণদের মধ্যে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা নেই, বরং তারা ট্যাক্স বেশি দিয়ে ট্যাক্স ফাইলকে ভারি করতে চায়। কারণ ব্যাংক বা কোনো বিনিয়োগে গেলে ট্যাক্স ফাইল ভালো থাকলে ব্যাংক তাকে ভালো ঋণ দেবে।

এনবিআরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এনবিআর এ অর্থবছর আইসিটি খাতের প্রায় ৯৯টি পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়ে ১% করেছে। ফলে স্যামসাং এর মতো কোম্পানি বাংলাদেশে কারখানা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সিম্ফনি, ওয়ালটন ল্যাপটপ, স্মার্টফোন উৎপাদনের জন্য কারখানা করছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উপদেষ্টা মোস্তফা জব্বার, কাজী রোজী এমপি। এতে সভাপতিত্ব করেন, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মোস্তফা জব্বার ও কাজী রোজী এমপিকে ইনকাম ট্যাক্স আইডি কার্ড প্রদান করা হয়।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২ নভেম্বর ২০১৭