ফিজি’ওর ভুলে ২০১১ বিশ্বকাপ খেলা হয়নি মাশরাফির

গেল ২ মে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে সাবেক-বর্তমান তারকাদের নিয়ে লাইভ আড্ডা শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। গতকাল শেষ হলো তামিমের ধারাবাহিক হয়ে উঠা লাইভ আড্ডাটি।

গতকাল শেষ পর্বে তামিমের লাইভ আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
শো’তে মাশরাফিকে ২০১১ সালে দেশের মাটিতে হওয়া বিশ্বকাপের স্মৃতি মনে করিয়ে দেন তামিম। তিনি বলেন, ‘আসলে মাশরাফি ভাই’র জন্য বিষয়টা বেশ আবেগের। ২০১১ বিশ্বকাপ আমাদের দেশে হয়েছিল। কিন্তু ২০১১ বিশ্বকাপে আপনি খেলতে পারেননি। আমরা টিভিতে দেখেছি আপনি অনেক আবেগ প্রবণ হয়ে গিয়েছিলেন। ঐ বিশ্বকাপে খেলতে না পারার বিষয়টা নিয়ে যদি আপনি কিছু বলতেন।’

এরপর মাশরাফিও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তামিম পুরনো কষ্টকর স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়ায় ম্যাশ বলেন, ‘প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপে খেলা। আর আমি যখন দেখলাম বাংলাদেশে বিশ্বকাপ হচ্ছে, তাই আমারও স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের হয়ে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলা। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে সমস্যা তৈরি হয়। ঢাকা লিগে বিকেএসপিতে খেলতে গিয়ে আমার লিগামেন্টে আবারও ইনজুরি হয়। কিন্তু লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়নি।

ইনজুরির পরে চিকিৎসার জন্য শ্রীলংকায় গেলাম। চিকিৎসক পায়ের অবস্থা দেখে আমাকে বলল- তুমি খেলতে পারবে কিন্তু খেলতে গিয়ে লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। এভাবে যদি খেলতে পারো তাহলে কোন সমস্যা নেই। তখন আমিও ডাক্তারের সাথে একমত হই। কিন্তু তারপরও বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাইনি।’

তবে মাশরাফি জানান ইনজুরির কারণে নয়, দলের ফিজিওর ভুলে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাননি। সেই ঘটনাও তুলে ধরেন ম্যাশ, ‘শ্রীলংকার চিকিৎসক ডেভিডিয়ান আমার রিপোর্টটা তখন আমাদের ফিজিও মাইকেল হেনলিরক কাছে পাঠিয়েছিলেন। মেইলে রিপোর্ট পান হেনলিরক। মেইলে অনেক সময় নিচের দিকে রিডমোর লেখা আসে। সেখানে ক্লিক করলে পুরো মেইল পড়া যায়। হেনলিরক রিডমোর ক্লিক না করে মেইলের উপরের অংশটুকু পড়েন। প্রথমটুকু পড়েই নির্বাচকদের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন হেনলিরক। নিচের অংশ বা পুরোটা পড়েননি হেনলিরক।

এরপর হেনলিরককে জিজ্ঞাসা করি এবং পরে পুরো মেইলটা তাকে দেখানোর পর সে আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে। তখন আর তাকে কিছু বলে তো লাভ নেই।

তবে বিশ্বকাপের সময় আমার স্ত্রী অন্ত:সত্বা ছিলেন, তার শরীরটাও খুব খারাপ ছিল। পরে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সময় দিতে পারি। আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন।’

তবে বিশ্বকাপে অংশ নিতে না পারায় কাউকে দোষারোপ করছেন না মাশরাফির। তিনি বলেন, ‘আসলে আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না, কখনো দেইনি আর দেবও না। তবে খারাপ লাগাটা আছে। আফসোসও আছে।’