জাতিসংঘ-মিয়ানমারের গোপন চুক্তি

ফিরলেও মিয়ানমারের নাগরিকত্ব পাবেনা রোহিঙ্গারা!

রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে পারলেও নাগরিকত্ব পাবে না। এবংকি তাদের চলাফেরায় বিধি নিষেধ আরোপ করা হবে। জাতিসংঘ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্স জানায়,   মে-র শেষ দিকে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির রূপরেখায় দুই পক্ষই বাংলাদেশের আশ্রয়ে থাকা লাখ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপদে ও নিজেদের পছন্দ অনুসারে ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া  হয়েছে।

তবে জাতিসংঘ ও মিয়ানমার সরকারের কেউই চুক্তির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

যদিও দুই পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ফাঁস হওয়া অনুলিপিটি অনলাইনেও ছড়িয়ে পড়েছে।

গোলযোগপূর্ণ রাখাইন অঞ্চলে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রবেশাধিকারে গত বছরের অগাস্ট থেকেই বাধা দিচ্ছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এ বাধা সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব এবং মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া শরণার্থীদের অধিকার বিষয়েই দুই পক্ষের মধ্যে মূল আলোচনা হয়েছে বলে সমঝোতা স্মারকটি পর্যালোচনা শেষে শুক্রবার ধারণার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।

“বিদ্যমান আইন ও বিধান অনুযায়ী মিয়ানমারের অন্য নাগরিকরা রাখাইন রাজ্যে চলাচলের যে ধরনের স্বাধীনতা পায়, প্রত্যাগমনকারীরাও সে ধরনের সুযোগ উপভোগ করতে পারবেন,” সমঝোতা স্মারকে এমনটা বলা হলেও রাখাইন রাজ্যের বাইরে চলাচলের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা অবাধ সুযোগ পাবেন কিনা তার কোনো উল্লেখ নেই,

পর্যবেক্ষরা বলছেন, সমঝোতা স্মারকে যে ‘বিদ্যমান আইন ও বিধানের’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে রাখাইন রাজ্যেই অবাধ চলাচলের সুযোগ পান না রোহিঙ্গারা। যে কারণে নিজভূমে ফিরতে পারলেও তাদের দুর্দশা লাঘব হবে না বলেও শঙ্কা তাদের।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মিয়ানমার বিষয়ক বিশ্লেষক লরা হাই জানান, “এখনকার পরিস্থিতিতে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর অর্থ হচ্ছে তাদেরকে জাতিবিদ্বেষের মুখেই ঠেলে দেওয়া; এমন একটা জায়গা, যেখানে তারা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। স্কুল, হাসপাতাল ও কাজের জন্য নির্ভরশীল জায়গাগুলোতে প্রবেশাধিকার পেতে কষ্ট করতে হয়। পরিস্থিতির যে বদল ঘটবে এই নথিতে তারও কোনো ধরনের নিশ্চয়তাই নেই।”

আরজেড/