ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসির ৩২তম জন্মদিন আজ

আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের স্ট্রাইকার ও বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস মেসির ৩২তম জন্মদিন আজ সোমবার।

আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে ১৯৮৭ সালের এ দিনে জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল তারকা মেসি। তার বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসি ইস্পাতের কারখানায় কাজ করতেন এবং মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি ছিলেন একজন খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নতা কর্মী।

মেসির পরিবারের আদি নিবাস ইতালির আকোনা শহরে। চার ভাই-বোনের মধ্যে মেসির বড় দুই ভাইয়ের নাম রদ্রিগো ও মাতিয়াস এবং ছোট বোনের নাম মারিয়া সল।

ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অনেক ঝোঁক ছিল মেসির। তাই তো তিনি মাত্র পাঁচ বছর বয়সে স্থানীয় ক্লাব গ্রান্দোলির হয়ে ফুটবল খেলা শুরু করেন। মেসির প্রথম কোচ তার বাবা হোর্হে।

১১ বছর বয়সে মেসির গ্রোথ হরমোনের সমস্যা ধরা পড়ে। প্রতিদিন প্রায় ৯০০ ডলার খরচ করতে হতো তার সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য। কিন্তু মেসির পরিবারের ছিল না সেই ব্যয়ভার বহন করার ক্ষমতা। স্থানীয় ক্লাব রিভার প্লেট মেসির প্রতি তাদের আগ্রহ দেখালেও সে সময় তারা মেসির চিকিৎসা খরচ বহন করতে অপারগ ছিল।

পরে বার্সেলোনার তৎকালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাস মেসির প্রতিভা সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি মেসির খেলা দেখে মুগ্ধ হন। হাতের কাছে কোনো কাগজ না পেয়ে একটি ন্যাপকিন পেপারে তিনি মেসির বাবার সাথে চুক্তি সাক্ষর করেন। বার্সেলোনা মেসির চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করতে রাজি হয়। এরপর মেসি এবং তার বাবা বার্সেলোনায় পাড়ি জমান। সেখানে মেসিকে বার্সেলোনার যুব একাডেমি লা মাসিয়া’র সদস্য করে নেয়া হয়।

বার্সেলোনার জার্সিতে এ দুর্দান্ত ফুটবলারের অভিষেক হয় ২০০৪ সালের ১৬ অক্টেবর। খুদে মেসির বয়স তখন ১৭ বছর। অভিষেকের সাত মাস পর ক্লাবের জার্সিতে প্রথম গোল পান এ ওয়ান্ডার কিড। ২০০৫ সালের ১ মে ঘরের মাঠ ন্যু-ক্যাম্পে আলবাকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে প্রথম গোল পান তিনি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

দেশের জার্সিতে ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট মেসির অভিষেক হয়। হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে সে ম্যাচে মাত্র ৯০ সেকেন্ড মাঠে ছিলেন ১৮-তে পা দেয়া মেসি।

মেসি আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে মেসি আর্জেনটিনাকে ২০০৫ সালে ফিফা ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতাতে সাহায্য করেন, যে টুর্নামেন্টে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয় করেন। এছাড়া ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলম্পিকে তিনি স্বর্ণপদক জয় করেন।

মেসি ২০১১ সালের আগস্টে আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পান। অধিনায়ক হিসেবে তিনি নিজের দেশকে টানা তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে তোলেন- ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৫ কোপা আমেরিকা এবং ২০১৬ কোপা আমেরিকা। তিনি ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল অর্জন করেন।

এছাড়া ব্যক্তিগত সাফল্যে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার হয়ে লা লিগায় ৩৬ গোল করে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মত ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জয় করে নেন মেসি। ক্যারিয়ারে চারটি ইউরোপিয়ান কাপ, আটটি লিগ টাইটেল, তিনটি ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ, পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। ৩ বার উয়েফা বেস্ট প্লেয়ার ও ১৬ বার বার্সেলোনার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন মেসি।

আজকের বাজার/এমএইচ