বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি সম্রাট

‘বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট’ নিয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় রোববার থেকে তাকে দুদকে হেফাজতে নেয়ার নেয়ার কথা ছিল। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ পিছিয়ে গেল।

শনিবার বিকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে থাকা সম্রাট অসুস্থ বোধ করলে প্রথমে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

দুদকের আবেদনে গত ১৭ নভেম্বর সম্রাটকে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় ঢাকার জজ আদালত। রবিবার থেকে হেফাজতে নেওয়ার কথা ছিল দুদকের।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কমিশনের উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, হাসপাতালে ভর্তি করানোর ফলে সম্রাটকে দুদক হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা পিছিয়ে গেছে।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান জানান, বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা বললে সম্রাটকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে রাতেই তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

কার্ডিয়াক সমস্যা নিয়ে সম্রাটকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে।

গেল সেপ্টেম্বরে শুদ্ধি অভিযানে রাজধানীর মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে আত্মগোপনে চলে যান ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম থেকে সহযোগী এনামুল হক আরমানসহ তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

ওইদিন বিকালেই সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

ওই রাতেই তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে আরও দুটি মামলা করা হয়।

কারাগারে নেয়ার দুদিন পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে সম্রাটকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চারদিন চিকিৎসা দিয়ে ১২ অক্টোবর আবার কারাগারে ফিরিয়ে নেয়া হয়।

গত ৬ নভেম্বর পুলিশ রমনা থানার অস্ত্র মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক। ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগের পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মত অপকর্মের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা সমমূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় ওই দুদকের মামলায়। ওই মামলায় ছয় দিনের তাকে ছয়দিনের হেফাজতে নেয়ার কথা ছিল দুদকের।

আজকের বাজার/এমএইচ