বছরের প্রথম প্রান্তিকে ঘুরে দাঁড়ালো রবি

একীভূতকরণ ও তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে টানা লোকসানের পর ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিকে ১১ দশমিক ৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে রবি। এ সময়ে দেশজুড়ে বৃহত্তম ৪.৫জি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে শীর্ষ উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্র্যান্ড হিসেবে নিজের অবস্থান মজবুত করেছে রবি।

তবে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে আইএফআরএস (ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস) সিক্সটিন বান্তবায়ন করায় অর্জিত স্বল্প মুনাফা ২৪ দশমিক ৬ কোটি টাকা লোকসানে পরিণত হয়েছে।

সেবা খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব এবং কোম্পানির নেয়া ব্যয় ব্যবস্থাপনার ফলে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্বল্প মুনাফা মার্জিন ও ইবিআইটিডিএ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে (আইএফআরএস সিক্সটিন’র ইমপ্লিকেশনগুলো বিবেচনায় না নিয়ে)। রবি যে ডিজিটাল কোম্পানি হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে ডেটা ও ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি তারই প্রতিফলন।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয় ১ হাজার ৮২৯ দশমিক ১ কোটি টাকা, যা গত প্রান্তিকের তুলনায় ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব বৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ৩ শতাংশ।

গত প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস থেকে রবি’র রাজস্ব ০ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় তা ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে গত প্রান্তিকের তুলনায় ডেটা থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩২ দশমিক ১ শতাংশ।

গ্রাহক সংখ্যা গত প্রান্তিকের তুলনায় ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৪ কোটি ৭৩ লাখে দাঁড়িয়েছে, যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৯ সালের প্রথম
প্রান্তিক শেষে ২ কোটি ৯০ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন যা মোট গ্রাহকের ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ।

আইএফআরএস সিক্সটিন’র ইমপ্লিকেশনগুলো বিবেচনায় না নিয়ে ২৯ দশমিক ১ শতাংশ মার্জিনসহ ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিকের রবি’র ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৫৩১ দশমিক ৭ কোটি টাকায়। পার্সেন্টেজ পয়েন্টে (পিপি) ইবিআইটিডিএ মার্জিন প্রবৃদ্ধি গত প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে ১ পিপি (আইএফআরএস সিক্সটিন বিবেচনায় না নিয়ে) এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় তা বেড়েছে ১১ পিপি (আইএফআরএস সিক্সটিন বিবেচনায় না নিয়ে)। আইএফআরএস সিক্সটিন বিবেচনায় নিলে রবি’র ইবিআইটিডিএ ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিকের দাঁড়িয়েছে ৭১৪ দশমিক ৮ কোটি টাকায়।

৪.৫জি নেটওয়ার্ক আরো বিস্তৃত করতে এ বছরের প্রথম প্রান্তিকের রবি’র মূলধনী বিনিয়োগ ৩০৪ দশমিক ৮ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে ৭ হাজার ৮৭৮টি সক্রিয় সাইট নিয়ে দেশের বৃহত্তম ৪.৫জি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে রবি। কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ২০১৯ সালের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত রবির মোট মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা; আর একই সময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান করেছে মাত্র ২৯০ কোটি টাকা।

এ প্রান্তিকের ৬৫৪ দশমিক ১ কোটি টাকাসহ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ২৪ হাজার ৫১০ কোটি টাকা জমা দিয়েছে রবি।

রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, “একীভূতকরণ ও তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে আর্থিক চাপ সামলে মুনাফার ঘরে আসতে পেরে আমরা আনন্দিত। ৪.৫জি নেটওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে সা¤প্রতিক সময়ে ডিজিটাল জীবনধারার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এমএনপির মাধ্যমে গ্রাহকরা ক্রমাগত রবিতে আসতে থাকায় এটা স্পষ্ট যে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্র্যান্ড হিসেবে বাজারে জায়গা করে নিয়েছে রবি। তবে আমাদের অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে ভারসাম্যহীন বাজার প্রতিযোগিতা নিরসনে আরো অনেক কিছু করার সুযোগ আছে।”

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আইএফআরএস সিক্সটিন (ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস) বাস্তবায়ন করেছে রবি। ইবিআইটিডিএ ও মুনাফার অঙ্কে এর প্রভাব পড়েছে। তাই বিষয়টি পরিষ্কার করতে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আমরা উভয় সংখ্যাটিই উল্লেখ করেছি। আর্থিক তুলনার ক্ষেত্রে আইএফআরএস সিক্সটিন’র পূর্ববর্তী আর্থিক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।