বন্যায় ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন

বন্যায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে রোপা আমন ধান ও শাকসবজির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে শুধুমাত্র রোপা আমনের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর। এতে করে এ উপজেলার ধান উৎপাদন ঘাটতি হবে প্রায় ২০ হাজার টন। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গাকবলিত উত্তরের সীমান্তবর্তী ফুলবাড়ী উপজেলাটি খাদ্য সংকটে পড়বে বলে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে রোপা ধানের চারা বন্যার পানিতে পচে যাওয়ায় জমিতে নতুন করে রোপা আমন ধান লাগাতে না পারায় মারাত্মক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

৫টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, যদি আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া না যায় তাহলে এ উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। তাছাড়া কাশিপুর ইউনিয়নটি উপজেলার খাদ্য ভা-ার হিসেবে পরিচিত। অথচ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ওই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচশ হেক্টর জমির রোপা আমন ধানসহ অন্যান্য ফসল এখনো পানির নিচে ডুবে আছে। ফলে বিপুল পরিমাণ রোপা আমন ধান ও শাকসবজির ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেবেন এই চিন্তায় এখনো কৃষক পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ফুলবাড়ী কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান ও শাকসবজির আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮ হেক্টর রোপা আমন ধান ও ৫০০ হেক্টর শাকসবজির ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে আছে আবার কোথাও কোথাও পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যার ফলে বাজারে চাল ও শাকসবজির বাজার বেড়েই চলছে। আপাতত উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সবজি উঠছে খুবই সামান্য। ফলে দামও বেড়ে গেছে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা।

ফুলবাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম, রহিদুল ইসলাম ও জহুরুল হক জানায়, এ মুহূর্তে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। কৃষক আনোয়ার হোসেন, আলমগীর, তৈয়ব আলী, পচা মিয়া, নেপাল চন্দ্র রায়সহ অনেকে জানায়, ৬/৭ দিন ধরে জমির আমন ধান ও শাকসবজি ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে আছে। অনেক জমির ধান একেবারেই পচে গেছে। এতে করে এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদুর রশিদ কৃষকদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাবে। এরপর ডুবে থাকা আমন ধানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমে আসবে। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে বিকল্প ফসল লাগিয়ে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।