বন্যা: কুড়িগ্রামে কর্মহীনতা ও খাদ্য সংকট প্রকট

কুড়িগ্রামে চলছে চলতি বছরের পঞ্চম দফা বন্যা। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের কবলে পড়ে দিনমজুররা প্রায় তিন মাস ধরে টানা কর্মহীন থাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। প্রকট হয়েছে গোখাদ্যের অভাবও।

এদিকে, জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। ধরলা নদীর পানি কমে আসলেও এখনও তা বিপদ সীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদেও। ফলে দেড় শতাধিক চর ও চর সংলগ্ন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে আছে।

কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের সারোডোব এলাকার কৃষক মতিয়ার ও মোজাম্মেল এবং ভোগডাঙা ইউনিয়নের চর বড়াইবাড়ি গ্রামের সোবহানসহ অনেকেই জানান, ধারদেনা করে দ্বিতীয় দফা আমন আবাদ করলেও সেসব ফসল এখন বন্যায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি নেমে গেলে কীভাবে পরবর্তীতে আমন ধান চাষ করবেন তা তাদের জানা নেই।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক শামসুদ্দিন মিঞা জানান, বন্যায় জেলার ১৮ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমির ফসল এখনও নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৩৩৫ হেক্টর রোপা আমন, ৬৫৫ হেক্টর মাশকালাই, ৩৫০ হেক্টর শাক সবজি ও ৮০ হেক্টর চিনাবাদাম রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও চূড়ান্তভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সরেজমিন ঘুরে দেখছি, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি হবে।’

অন্যদিকে, তিস্তার ভাঙন গোড়াই পিয়ার ও চর বজরা, ধরলার ভাঙন সারডোব ও জগমোহনের চরসহ বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর ভাঙন আরও তীব্র হয়েছে। গত তিন দিনে দুই শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেললেও তাতে কাজ হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’