বরিশালের ওমর ফারুক হাঁস খামার করে স্বাবলম্বী

সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর এলাকার ওমর ফারুক হাঁস খামার করে এখন স্বাবলম্বী ।গত মাত্র সাত মাস ধরে একটি হাঁস উৎপাদন খামার পরিচালনা করে তার মুখে হাসি ফুটে উঠেছে, দেখা দিতে শুরু করেছে স্বপ্নের স্বার্থক বাস্তবায়ন। ওমর ফারুক হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিকভাবে আরো স্বাবলম্বী।

সরোজমিনে পাওয়া তথ্যনুযায়ী জানা গেছে, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল নেত্রকোনা থেকে চিনের খাকি ক্যাম্বেল, বেজিং ও জিনডিং এ ৩ জাতের ৬’শ হাঁসের বাচ্চা ক্রয় করে এনে “মাসাল্লাহ ভাই ভাই” হাঁস উৎপাদন খামারের যাত্রা শুরু করে ওমর ফারুক।

প্রতিদিন গড়ে ১’শ ৮০টি হাঁসি ডিম দেয় “মাসাল্লাহ ভাই ভাই” হাঁস উৎপাদন খামারে। যা ৪০ টাকা থেকে ৪৪ টাকা হালি দরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে ।

বর্তমানে হাঁস খামারটিতে ৩’শ ৭৫টি হাঁসি ও হাঁসা রয়েছে ১’শ ৫০টি। ইতিমধ্যে কিছু কিছু হাঁসি ৬ মাসের স্থলে ৫ মাসের মাথায় ডিম দিতে শুরু করেছে। সামনে বাকি হাঁসিগুলো ডিম দেয়া শুরু করলে এর ডিমের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে।

এবিষয়ে “মাসাল্লাহ ভাই ভাই” হাঁস উৎপাদন খামারের সফল পরিচালনাকারী ওমর ফারুক বাসস’কে বলেন, অল্প খরচে হাঁসের খামার গড়ে তুলে সহজেই স্বণির্ভর হওয়া যায়। প্রথমে আমি ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকার পুজিঁ দিয়ে খামারের কার্যক্রম শুরু করি। এ অল্প সময়ের মধ্যেই আমি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছি। এখন আমি হাঁসএবং ডিম বিক্রি করে পরিবারকে সাহায্য করতে পারি। খামারে এখনো সব হাঁসিতে ডিম দেওয়া শুরু করেনি। বাকি হাসিঁগুলো ডিম দেওয়া শুরু করলে ডিম বিক্রি করার মাধ্যমে আয়ের অর্থ আরো বেশী হবে বলে ফারুক আশা করছেন।

তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে খামারে প্রতি মাসে হাঁসের খাবার ক্রয় করা থেকে বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে তার ৬০ হাজার টাকা খরচ হতো। বর্তমানে হাঁসগুলো বড় হওয়ার পাশাপাশি খরচের অর্থ সাশ্রয় হয়ে ২৮ হাজার টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।

প্রথমদিকে হাসেঁর খাবারের পিছনেই অনেকটা অর্থ ব্যয় হতো। এখন হাঁসগুলো নিজেরাই পাশ্ববর্তী খাল-বিলে প্রাকৃতিক খাবার সংগ্রহ করে খাওয়ার কারণে খরচ কম হয়।

এছাড়া হাসঁগুলোর পরির্চযায় ১টা ভ্যাকসিন ক্রয় করে ১’শ হাঁসের মাঝে দিতে হয়। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৫ দিন দ্বিতীৃয় পর্যায়ে ৪৫ দিন পর দিতে হয়।

ওমর ফারুক আরও বলেন, তার খামার থেকে কোন হাঁসি বিক্রি করেন না তিনি, তবে মাঝে মাঝে হাঁসা বিক্রি করে থাকেন। এখন একদিকে ফার্মে খাবারের পিছনে খরচ কমে এসেছে অন্যদিকে হাঁসিগুলো ডিম দিতে শুরু করায় তার স্বপ্ন এখন বাস্তবায়নের পথে ।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: নুরুল আলম বলেন, ওমর ফারুক যদি সুষ্ঠুভাবে খামারটি পরিচালনা করতে পারেন তবে আরও ভালো করতে পারবেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁসের খামার করতে পারলে লাভবান হওয়া যায়।

খামারের সামনে পানি থাকলে খাবার কম লাগে। সময় মতো ভ্যাকসিন দিতে হবে। পরিষ্কার-পরিছন্ন জায়গায় রাখতে হবে ও ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, ঠিকমতো খামার করতে পারলে মুরগি ও হাঁসের খামার এবং ডেইরি ফার্মের প্রত্যেকটিই লাভজনক। তথ্য:বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান