বরিশালে মাল্টা চাষে ফিরল সুদিন গুরুদাস ব্যানার্জী’র

জেলার উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামে নারকেল, আম বাগান, মাছের খামার ও পরে মাল্টা বাগান চাষে ফিরল সুদিন গুরুদাস ব্যানার্জী শ্যামল’র। এবছর তিনি শুধু মাল্টা চাষ করেই আয় করেছে প্রায় ২ লাখ টাকা।
সফল চাষি গুরুদাস ব্যানার্জী শ্যামল জানান, প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে নারকেল, আম বাগান, মাছের খামার ও পরে মাল্টা বাগান চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফলতা অর্জন করছেন। ২০১৬ সালে ৩০ শতক জমির উপরে একটি মালটা বাগান করেন। এ বাগানে বর্তমানে বারি মালটা-১ প্রজাতির ৪২টি পূর্ণ বয়স্ক মাল্টা গাছ রয়েছে। আমার বাগানের চাষ করা মাল্টা রাসায়নিক, ফরমালিনমুক্ত ও সুস্বাদু রসালো। পাইকারী ১’শ ৩০ টাকা দরে বিক্রি করছেন এ মাল্টা। প্রায় ৬০ মণ মাল্টা বিক্রির আশা পোষণ করেন কৃষক শ্যামল ব্যানার্জী।

শ্যামল জানান, মাল্টা ফসলে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় এবং রোগের আক্রমণ হতে পারে। পোকার মধ্যে সাইলিড সবচেয়ে ক্ষতিকর। এছাড়া রয়েছে পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা, ফল ছিদ্রকারী পোকা, খোসা পোকা, উঁইপোকা। রোগগুলো হলো আগামরা রোগ, গ্রিনিং, ক্যাংকার এবং আঠাঝড়া।
শ্যামল আরো জানান, মাল্টা চাষে দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে তিনি ১ম স্থান অধিকার করেছেন। গত আগস্ট মাসে মাল্টা বিক্রির উদ্বোধন উপলক্ষে ওই বাগানে উপস্থিত হন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন তালুকদার, কৃষি কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার হালদার, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তোফাজ্জেল হোসেনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পাইকার ও খুচরা ক্রেতারা।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন তালুকদার জানান, শ্যামল ব্যানার্জী অত্যন্ত সফল কৃষক। তিনি মাল্টা বাগানের পাশাপাশি আম, নারকেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ বৃক্ষের বাগান করেছেন। প্রতিটি বাগানেই তিনি সফল হয়েছেন। উপজেলার ইতিমধ্যে শতাধিক মাল্টা বাগান হয়েছে। স্থানীয়দের প্রয়োজন মিটিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলা শহরে বিক্রি হচ্ছে এ মাল্টা। মাল্টা একটি অত্যন্ত সুস্বাদু ফল। মাল্টা চাষ দেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় কৃষিখাত। যে কারণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. তাওফিকুল আলম জানান, মাল্টা চাষে দণিনাঞ্চলের মানুষজনের মধ্যে যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে তা আগামী দিনে মাল্টা চাষে বিপ্লব সৃষ্টি করবে। কৃষক একটু পরিচর্যা করলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। এ অঞ্চলের ফলের চাহিদা পূরণ ও এ ফলের প্রসারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। এ অর্থকরী ফসলটি চাষে কৃষি বিভাগ উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ এবং সহযোগিতা করছেন।