বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া প্রস্তাবনা বাস্তবায়নেই আস্থা ফিরবে পুঁজিবাজারে

পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের পথ খুঁজতে এক জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয় আজ ৯ এপ্রিল দুপুর ১২টায়। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা।

ডিএসইতে পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ)  সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন ‘অর্থমন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রস্তাবনা বাংলাদেশ ব্যাংক মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করলে পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট দূর হবে। পাশাপাশি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বন্ডে বিনিয়োগকে এক্সপোজারের বাইরে রাখতে হবে। তাতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো আরও বিনিয়োগের  সুযোগ পাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, পুঁজিবাজারে চলমান সংকট উত্তরণে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা বাংলাদেশ ব্যাংক যত দ্রুত বাস্তবায়ন করবে তত দ্রুত পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

প্রস্তাবনাগুলো হচ্ছে-

১। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১(সংশোধিত ২০১৩)  বাধ্যবাধকতার বাইরেও নতুন করে ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সীমা হিসাবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বিত ভিত্তি গণনা করার বিষয়টি আরোপিত হয়েছে। এতে বাজারে তারল্য প্রবাহের ক্ষেত্রটি সংকোচিত হয়েছে। এমন অবস্থায় ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৬ এর ক ধারা অনুসারে একক/ সলো ভিত্তিতে এক্সপোজার গণনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

২।  ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১(সংশোধিত ২০১৩)  এর ২৬ এর ক ধারায় প্রযোজ্য সব সিকিউরিটিজেের বাজার মুল্য অনুর্ভুক্ত করার বিধান আছে।তবে যেসব সিকিউরিটিজেের বাজার মুল্য নেই তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত না করা বা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন বন্ড ডিবেঞ্চার প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার ও অতালিকাভূক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে ব্যাংকের এক্সপোজেরর হিসাবের বাইরে রাখা।

৩।কৌশলগত বিনিয়োগ, যা পুরো মেয়াদকাল পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে এবং যে সব সিকিউরিটিজের লেনদেন হয় না। সেই সব সিকিউরিটিজকে এক্সপোজার গণনা থেকে বাদ দেয়া।

৪। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর এক্সপোজার লিমিট গণনা করার ক্ষেত্রে শেয়ারের বাজার মূল্য অনুযায়ী গণনা না করে ক্রয় মুল্যের ভিত্তিতে গনণা করা।

৫। ব্যাংক তার পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সাবসিডিয়ারিকে প্রদত্ত ঋনের যে অংশ ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করে তা পুঁজিবাজারে এক্সপোজার হিসেবে গণনা না করে শুধুমাত্র উক্ত ঋনের যে অংশ পুঁজিবাজারে বিভিন্ন সিকিউরিটেজে বিনিয়োগ করা হয়; তাই উক্ত ব্যাংকে প্রকৃত পুঁজিবাজার এক্সপোজার হিসেবে গণনা করা।

এসময় ডিবিএ সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, সারা দেশে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর শাখা খোলার ব্যাপারে প্রস্তাব উঠেছে। নেটিং সিস্টেম চালু, ঢাকার মধ্যে বুথের অনুমোদনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বাজার নিয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রতিনিধিরা। যার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতির সামাধানে কাজ করা যায়।

তিনি বলেন, বাজার কখনো কৃত্রিম হয়নি। বাজারে পেনিক সেল হয়েছে।  এখানে আস্থার সংকট পরিলক্ষিতও হয়েছে। বিনিয়োগকারী থাকলে মার্কেট বাড়বে। ফোন করে শেয়ার কি নিয়ে মার্কেট ভালো রাখা যায় না।

আইপিও নিয়ে তিনি বলে,  কোন কোম্পানির আইপিও বাজারে আসছে, কেমন তার অবস্থা, কত টাকা তুলবে তাও জানিনা। তাই একঠি খসড়া প্রসপেক্টাস ডিবিএকে পাঠানোর ব্যবস্থা করলে আমরা এ নিয়ে আরও সতর্ক থাকতে পারি।

আর বিএমবিএর সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবনা বাংলাদেশ ব্যাংক মেনে নিয়ে তা বাস্থবায়ন করলে পুঁজিবাজার প্রাণ ফিরে পাবে। এছাড়াা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বন্ডে বিনিয়োগকে এক্সপোজারের বাইরে রাখতে হবে। তাতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো আরও বিনিয়োগের  সুযোগ পাবে।