বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা প্রত্যাহার করেছে জাপান – অর্থমন্ত্রী

জাপান সরকার বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতামূলক পরামর্শ (অ্যাভাইজারি) প্রত্যাহার করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনদিনের (৭ থেকে ১০ ডিসেম্বর) জাপান সফর শেষে দেশে ফিরে রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন।

গত বছরের অক্টোবরে রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনার পর বাংলাদেশে জাপানি নাগরিকদের ভ্রমণ বিষয়ে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্কতামূলক পরামর্শ জারি করে। তাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া জাপানি নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণ না করার জন্য বলা হয়।

চলতি বছর ১ জুলাই গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে জাপান তাদের অনেক কর্মী দেশে ফিরিয়ে নেয়।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘জাইকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমাদের একদিন বৈঠক হলো। ওই দিনই জাপানের অর্থমন্ত্রী তারো আসোর সঙ্গে বৈঠক হয়। তিনি (জাপানের অর্থমন্ত্রী) বললেন, আলোচনার কোনো বিষয় নেই। কেননা সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই অ্যাভাইজারি বাতিল। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের রিজার্ভেশন আর নেই। এখন এটা ইফেকটিভ হতে যা সময় লাগবে। সো দিস ওয়াজ এ ভেরিগুড ইনফরমেশন, ভেরি গুড থিংকস অব আমাদের দেশের জন্য। জাপানের যে রেস্ট্রিকশন বাংলাদেশের জন্য ছিল ইন ডুইং বিজনেস, দ্যাট হ্যাজ বিন উইথড্র।’

মন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘আমি ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রীকেও এসব ব্যাপারে অবহিত করি।’

তিনি বলেছেন, ‘গত ১ জুলাইয়ের (হলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় হামলা) পর জাপানের সঙ্গে আমাদের যত নেগোশিয়েশন হয়েছে সবগুলো আমাদের দেশের বাইরে হয়েছে, থার্ড কান্ট্রিতে। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য জায়গায় সব ধরনের চুক্তিটুক্তি বা আলোচনা হয়েছে।’

জাইকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘তিনি (জাইকার প্রেসিডেন্ট) সেখানে বললেন, ডিসকাশন করার তো বেশি কিছু নেই। আমাদের বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা কোনো রেস্ট্রিকশন পারত পক্ষে মানি না। বাধ্য হয়ে মানি। আমাদের জন্য বাংলাদেশ ওপেন।’

কবে নাগাদ জাপানিরা বাংলাদেশে আসবে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘অফিসিয়াল ডেলিগেশন উইল বি কামিং ভেরি সর্টলি। বিজনেসম্যানরা আসত, অফিসিয়ালরা আসত না। এটা এখন উইথড্র হলো। এটা প্রসেসে যা একটু সময় লাগবে।’

নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে জাপানীরা আসতে চাইছিল না- এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আসতে চাচ্ছিল না কে বলল? নো, নো, নো ইটস রং। তারা কোনো স্টেটমেন্ট দেয়নি, কেবল ওই অ্যাভাইজারিটা ছিল। পাবলিকলি তারা সব সময় আমাদের সমর্থন করে গেছে।’

জাপানের সিটি গর্ভনেন্স নামে প্রকল্পের ২২ জন কনসালটেন্ট গত জুনের পর থেকে আর বাংলাদেশে ফেরেনি- একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানতে চাইলে উপস্থিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন বলেছেন, ‘স্পেসিফিক প্রজেক্ট ইনফরমেশন আমি এখন দিতে পারব না। ১ জুলাইয়ের পর অনেকে গেছেন ফিরে এসেছেন। আমাদের এখানে কিন্তু কোনো কাজ বন্ধ নেই, কোনো প্রজেক্টের কাজ আটকে নেই আমি এটা বলতে পারি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘সিআইডির রিপোর্ট আমি দেখিনি। এ ব্যাপারে আমার কোনো কমেন্ট নেই। আমি একটি তদন্ত করিয়েছি, আমাদের ইন্টারনাল। আই সুড রিলিজ দ্যাট রিপোর্ট ইন ডিউ টাইম। যখন আমার মনে হবে ইট ইজ কনভিনিয়েন টাইম, আই পাবলিশ ইট।’

এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট