বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ কমিশনের বৈঠক শুরু

বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে আজ দুই দিনব্যাপী ১৩তম যৌথ কমিশনের(জেসি)বৈঠক শুরু হয়েছে। জনশক্তি, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানীসহ বেশ কয়েকটি খাতে দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের লক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের(ইআরডি)সচিব মনোয়ার আহমেদ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।

সৌদি আরবের শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার মাহির আব্দুল রহমান গাসিম তার দেশের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
রাজধানীর শের-এ-বাংলা নগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে যৌথ কমিশনের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ইআরডি সচিব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং অনেক দেশ ইতোমধ্যেই এখানে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ছে এবং সৌদি বিনিয়োগকারীরাও এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। মনোয়ার বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিণত হতে ও এসজিডিএস লক্ষ্য অর্জনের জন্য যোগাযোগ, বন্দর, বিদ্যুৎ, জ্বালানী, আইসিটি, কৃষি ও মৎস্য খাতে সৌদি আরবের কাছ থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগ আশা করছে।

ইআরডি সচিব বলেন, বাংলাদেশের অনেক দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক এখন সৌদি আরবে কাজ করছেন। বৈঠকে সেখানে কর্মরত বাংলাদেশীরা কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সে ব্যাপারে আলোচনা হবে। সৌদি ডেপুটি মিনিস্টার গাসিম বলেন, যৌথ কমিশন বৈঠকে সৌদি আরবের ২১টি সংস্থার প্রায় ২৯ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। দেশটির বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরাও বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।

তিনি বলেন, বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ১৬ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছেন এবং তারা তেল সমৃদ্ধ দেশটির অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। গাসিম বলেন, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌদি আরব সফরের পর বর্তমানে দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খুবই ভাল যাচ্ছে। বৈঠকে সৌদি আরবে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত গোলাম মাসিহ্ও বক্তব্য রাখেন। এই যৌথ কমিশনের আগের ১২টি অধিবেশন পালাক্রমে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১২তম যৌথ কমিশন বৈঠকটি ২০১৮ সালের ১৪ ও ১৫ মার্চ সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয়। ১২তম যৌথ কমিশনের ধারা অব্যহত রেখে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইআরডি শের-এ-বাংলা নগরে ১৩তম যৌথ কমিশন অধিবেশনের আয়োজন করে।

বাংলাদেশ এমন এক সময় এই বৈঠকের আয়োজন করছে যখন দেশটির উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ এ বছর দেশটির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, যৌথ কমিশনের এই ১৩তম বৈঠকে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান, অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও শিল্প, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী, ধর্ম, পর্যটন, আইসিটি, কৃষি ও মৎস্য, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার মতো দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে। তারা আরো বলেন, সৌদি আরবের সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অর্ধশত বছর পূর্ণ করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সৌদি আরবের সাথে আমাদের সম্পর্ক যতটা গভীর হয়েছে, আর কারো সময়ে তা হয়নি। আরামকো, এসিডব্লিউএ পাওয়ার, বাওয়ানি ও আরো কয়েকটি বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও এই দলটির সাথে এসেছে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান