বাজেটের পুঁজিবাজারের নেতিবাচক বিষয় নিয়ে সর্বোচ্চ মহলে বসবে বিএসইসি

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের যেসব বিষয় ইতিমধ্যে সমস্যা বলে চিহ্নিত হয়েছে তা সমাধানে সরকারের সর্বোচ্চ মহলের সাথে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ( (ডিবিএ), ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন (ডিবিএ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাথে বিএসইর বৈঠকে এ আশ্বাস দেন বিএসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাঁধাগ্রস্থ করে এমন কিছু বাজেটে থাকবে না। আমরা সরকারের সর্বোচ্চ বিষয়ে বৈঠক করা হবে।

তিনি আরও বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভের ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ করার প্রস্তাবের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অর্থমন্ত্রীর সাথেও বৈঠক করা হবে।

স্টেকহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আইপিও সংশোধনীর বিষয়ে আশা করি আপনারা সম্মিলিতভাবে বাজারের জন্য ভালো এমন কিছু প্রস্তাব করেছেন। এছাড়া এরইমধ্যে আরও কিছু প্রস্তাবনা জমা পড়েছে। কমিশন সব কিছু যাছাই-বাছাই করে বাজারের জন্য যা ভালো হবে, সেই সিদ্ধান্তই নেবে।

স্টেকহোল্ডাররা আইপিওতে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে কমিশনের গৃহিত কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকার পরিবর্তে ৩০ কোটি টাকা বা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ উত্তোলন করার প্রস্তাব করেছেন। এক্ষেত্রে যেটির পরিমাণ বেশি, সেই পরিমাণ তুলতে হবে। তবে আইপিওসহ পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা হতে হবে। আর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ১০০ কোটি টাকার পরিবর্তে ৭৫ কোটি টাকা বা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ উত্তোলন করার প্রস্তাব করেছেন। এক্ষেত্রেও যেটির পরিমাণ বেশি, সেই পরিমাণ উত্তোলন করতে হবে।

এদিকে পাবলিক ইস্যুর তালিকার ক্ষেত্রে কোন কোম্পানির আইন-কানুন ব্যত্যয়ের বিষয়ে মতামত প্রেরণের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ৪৫ কার্যদিবস সময় চেয়েছেন। যা নিয়ে কমিশন ৩০ দিন সময়ের কথা বলেছেন।

আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে কোটা সুবিধা পেতে প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটি ফান্ডের ক্ষেত্রে কিছু শর্তের প্রস্তাবনা দিয়েছে স্টেকহোল্ডাররা। এরমধ্যে রয়েছে- ফান্ডগুলোর বয়স রেজিস্ট্রেশন থেকে কমপক্ষে ৩ বছর হতে হবে, সর্বশেষ ২ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে, সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব জমা দিতে হবে ও সর্বশেষ ব্যালেন্স শীর্টের ৫ শতাংশ সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে। এছাড়া অন্য যোগ্য বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি মার্কেটে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ থাকতে হবে।

স্টেকহোল্ডাররা আইপিও অনুমোদনের জন্য আবেদনের সময় ইস্যুয়ারকে পূর্বে নগদে উত্তোলিত মূলধনের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ব্যবহার সম্পন্ন করার শর্ত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়া বাকি ৫০ শতাংশ কোম্পানির আইপিওতে আবেদন শুরু হওয়ার আগে সম্পন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

আইপিওতে বুক বিল্ডিংয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা (মিউচ্যুয়াল ফান্ডসহ) ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে স্টেকহোল্ডাররা। আর সাধারন বিনিয়োগকারীদের কোটা ৪৫ শতাংশ ও প্রবাসি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা (মিউচ্যুয়াল ফান্ডসহ) ৩৫ শতাংশ, সাধারন বিনিয়োগকারীদের কোটা ৬০ শতাংশ ও প্রবাসিদের কোটা ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ৩৫ শতাংশের কম ও বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কোটা পূরণ না হলে, ওই আইপিও বাতিল করার প্রস্তাব করেছে।