বাণিজ্যিকভাবে ওল চাষে সফলতা পেয়েছেন নওগাঁর কৃষকরা

নওগাঁয় বাণিজ্যিকভাবে ওল চাষ করে অত্যন্ত লাভবান হয়েছেন কয়েকজন কৃষক। প্রতি বিঘা জমিতে ওল চাষ করে সব খরচ বাদ দিয়ে নীট লাভ করেছেন এক লাখ টাকারও বেশী। এর ফলে তাদের সংসারে যেমন এসেছে স্বচ্ছলতা, পাশাপাশি ঐ এলাকায় ওল চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অন্য কৃষকরা।

নওগাঁ এলাকায় ওল সাধারণত বাড়ির উঠানের পাশে, কুয়ার পাশে, টিউবওয়েলের পাশে কিংবা বাড়ির পিছনে পরিত্যক্ত জায়গায় চাষ করা হয়। তবে ওলের গাছ গজায় আপনা আপনি এবং সেখান থেকে পারিবারিকভাবে ওল খাওয়া হয়ে থাকে। সেই ওলগুলো ছিল নিন্মমানের।

নওগাঁ সদর উপজেলার কির্ত্তীপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের এখলাস উদ্দিন ও আলী হোসেন এবং মাধাইনগর গ্রামের আবুল কাশেম ওল চাষ করে এ সফলতা অর্জন করেছেন। এদের মধ্যে এখলাস উদ্দিন গত তিন বছর থেকে নিয়মিত ওল চাষ করছেন। এ বছরও তিনি এক বিঘা জমিতে ওল চাষ করেছেন। আবুল কাশেম ও আলী হোসেন প্রত্যেকে ১০ কাঠা করে জমিতে ওল চাষ করেছেন।

তারা জানান, চৈত্র মাসে জমিতে ওলের বীজ রোপণ করতে হয়। তারা তাদের জমিতে সেই সময় ওল বীজ রোপণ করেছেন। ওলের পূর্ণতা পেতে পুরো ৬ মাস সময় লাগে। সেই হিসেবে তারা জমি থেকে ওল উত্তোলন করবেন ভাদ্র মাসে। এ সময়ে একেকটি ওল ৮ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ওল অত্যন্ত সুস্বাদু। কোন রকম গলা জ্বালা করে না। এ কারণে বাজারে তাদের উৎপাতি ওলের চাহিদা রয়েছে খুবই বেশি।

এখলাস ও আবুল কাশেম জানিয়েছেন এক বিঘা জমিতে মোট ওল উৎপাদিত হয়ে থাকে ১১০ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত। সিজনের প্রধম দিকে বর্তমানে এক মণ ওল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২শ টাকায়। সেই হিসেবে এক বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত ওলের মোট বিক্রি মূল্য ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। ও চাষের খরচ তেমন নেই। কেবল জমিতে গোবর সার দিলেই চলে। বীজ এবং গোবর সার মিলিয়ে খরচ হয় সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা। কাজেই প্রতি বিঘা জমি থেকে ১ লাখ টাকারও বেশী মুনাফা দাঁড়ায়। এর ফলে ওল চাষ অত্যন্ত লাভজনক।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেছেন ওল একটি উপাদেয় তরকারী। এর পুষ্টিমানও রয়েছে। তিনি বলেছেন দেশের অন্যান্য জেলায় ব্যপকভাবে ওল চাষ হলেও নওগাঁয় এ প্রচলন নেই। তবে কির্ত্তীপুর এলাকায় কিছু কৃষক ওল চাষ শুরু করেছেন। তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। তাদের এ সফলতা দেখে অন্য কৃষকরাও এগিয়ে এসেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

আরএম/