বায়ূ দূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা হাইকোর্টের

রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ রোধে সোমবার ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে আদালত। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

নির্দেশনাগুলো হলো:

১. ঢাকা শহরের মধ্যে যেসব ট্রাক বা অন্যান্য যানবাহনে বালি বা মাটি পরিবহন করা হয়, সেগুলো কাভার্ড (ঢাকনা) যুক্ত করতে হবে।

২. যেসব জায়গায় নির্মাণ কাজ চলে সেসব স্থানে ঠিকাদারদের ঢাকনা দিয়ে নির্মাণ কাজ পরিচালনা করতে হবে।

৩. ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনও পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিংয়ের যেসব কাজ চলছে, সেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির শর্ত মেনে করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. গাড়ির কলো ধোয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে।

৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরোনো হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনও বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।

৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে হবে এবং মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এসব নির্দেশনার পাশাপাশি, ঢাকায় বায়ু দূষণ কেন রোধ করা যাচ্ছে না এবং বায়ু দূষণ রোধে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে হাইকোর্টে তলব করা হয়েছে এবং ১ মার্চের মধ্যে সব বিবাদীকে ওই ৯ দফা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার এবং সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন সাইদ আহমেদ রাজা।

আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, নির্মল বায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় বিশ্ব ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প ছিল সেটি পরিবেশ অধিদপ্তর কিভাবে ব্যয় করেছে, পরিবেশ উন্নয়নে তা কি ধরনের ভূমিকা রেখেছে এবং এতে জনগণ কি ধরনের সুফল পাচ্ছে অর্থাৎ পুরো প্রকল্পের টাকা কিভাবে ব্যয় হয়েছে তা সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিকে তলব করেছে আদালত।

গত বছরের ২১ জানুয়ারি ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এই রিট করা হয়। সেই রিটের ধারাবাহিকতায় সোমবার এসব নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। ইউএনবি

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান