বাসের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু : উপচেপড়া ভিড়

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাকে স্বস্তিদায়ক করতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন কাউন্টার থেকে বাসের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
প্রতিবছরের মতো রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল ও কল্যাণপুর থেকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী বাসের আগাম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। টিকিট কাটতে ভোর থেকেই বিভিন্ন কাউন্টারে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল- এ চারটি বিভাগের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসের টিকিট বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর গাবতলী ও আশপাশের এসব এলাকা থেকে।
গত দুই বছরের মতো এবারও ঈদযাত্রায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নির্ধারিত ভাড়া থাকছে। চাহিদা অনুযায়ী এবার বিভিন্ন রুটে নতুন বাস নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে গত ৯ মে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনভূক্ত বাস কোম্পানিগুলোর মালিকদের এক বৈঠকে আগাম টিকিট বিক্রির এই সিদ্ধান্ত হয়।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে আগের মতো তাৎক্ষণিক টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এবার শ্যামলী পরিবহনের চারটি কাউন্টার থেকে হচ্ছে বাসের অগ্রিম টিকিট। কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে দেওয়া হচ্ছে গাইবান্ধা, রংপুর, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর রুটের টিকিট। শ্যামলী থেকে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, বালিয়াডাঙ্গি ও রানীশংকৈলের টিকিট, আসাদগেট থেকে দেওয়া হচ্ছে ফুলবাড়ী-দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারীর টিকিট এবং টেকনিক্যাল মোহনা পাম্পের কাউন্টার থেকে দেওয়া হচ্ছে পাবনার টিকিট।
রাজধানীর একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত কামরার আহমেদ পরিবার-পরিজনসহ ঈদে আগামী ২ জুন রাতে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যেতে চান। তিনি আজ সকালে গাবতলীতে গিয়ে পূর্বাশা পরিবহন থেকে চারটি টিকিট ক্রয় করেছেন।

আগমনী, নাবিল, ন্যাশনাল, দেশ ট্রাভেলসের টিকিট দেওয়া হয়েছে অনলাইনে। সহজ.কম থেকে যে কেউ প্রয়োজনীয় গন্তব্যের টিকিট কিনতে পারছেন।
গাবতলীতে টিকিট কিনতে আসা লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার ৩০ মে পড়ছে বৃহস্পতিবার। ওই দিন রাতে টিকিটের জন্য চাপ অনেক বেশি। পরদিন শুক্রবার সকালের টিকিটের চাপও বেশি। এরপর ৩ জুনের টিকিটের চাহিদা বেশি। আবার কোনো কোনো কাউন্টারে ৩ জুনের টিকিট শেষ বলেও জানানো হচ্ছে। এদিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে মোট সাতদিন পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একজন নেতা বাসস’কে বলেন, রাজধানীর গাবতলী, মাজার রোড, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট ও কলাবাগান এলাকায় বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। যতক্ষণ টিকিট থাকবে ততক্ষণ বিক্রি চলবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া বাসস’কে জানান, ‘আগামী ২০ মে থেকে বিআরটিসি’র সংশ্লিষ্ট ডিপো হতে ঈদের আগাম টিকেট বিক্রয় শুরু হবে। আগামী ২৭ মে থেকে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’- এর আয়োজন থাকছে। ১০ জুন পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের এই বাস চলাচল করবে। আর ঢাকাস্থ মতিঝিল, জোয়ারসাহারা, কল্যাণপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর বাস ডিপো, যাত্রাবাড়ি এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ বাস ডিপো (ফুলবাড়িয়াস্থ সিবিএস-২) হতে আগাম টিকেট বিক্রি করা হবে।’
বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান আরও জানান, সরকারের আমদানীকৃত নতুন দেড়’ শো বাসসহ এবার মোট এক হাজার ৮৯টি বাস- ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে ব্যবহার করা হবে। এর মধ্যে ৬৪৯টি বাস ঢাকা থেকে এবং ৩৯০টি ঢাকার বাইরে থেকে বিভিন্ন জেলায়-উপজেলায় চলাচল করবে। কোথাও কোনো বাস বিকল হলে বা দুর্ঘটনায় পড়লে সেখানে সরবরাহ করার জন্য ৫০টি বাস সংস্থায় রিজার্ভ থাকবে বলেও জানান তিনি।